স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাঠে তৈরি হয়েছে প্যান্ডেল। নিজস্ব চিত্র।
বিনা অনুমতিতে সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে প্যান্ডেল করে বিয়ের অনুষ্ঠান! সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক। নদীয়ার তেহট্টের পলাশীপাড়া থানার বার্নিয়া এলাকার ঘটনা। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, বার্নিয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাছেই বাড়ি রণজিৎ শিকদারের। চলতি মাসের ২৫ তারিখ তাঁর ছেলের বিয়ে ঠিক হয়েছে। বৌভাতের অনুষ্ঠান ২৭ নভেম্বর। অভিযোগ, সেই বিয়ের প্যান্ডেলই রণজিৎ বানাতে শুরু করেছেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাঠে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাঠ জুড়ে তৈরি করা হচ্ছে সেই প্যান্ডেল। এই খবর স্থানীয়দের মাধ্যমে পলাশীপাড়া ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আধিকারিক শ্যামল বিশ্বাসের কাছে যায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছে এই ঘটনার সত্যতা যাচাই করে তিনি থানায় অভিযোগ করেন। তেহট্ট-২ ব্লকের বিডিওকে বিষয়টি জানান শ্যামল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আধিকারিক শ্যামল বলেন, ‘‘আমি স্থানীয় সূত্রে জানতে পারি যে, কোনও এক জন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাঠে অনুষ্ঠানের প্যান্ডেল করছেন। বিষয়টি জানার পর আমি পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি, যাতে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে।’’
কী ভাবে একটি সরকারি জায়গায় ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানের প্যান্ডেল তৈরি হচ্ছে? সেই নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, ওই এলাকায় রণজিতের বিশেষ প্রভাব রয়েছে। ক্ষমতাসীন তৃণমূল সরকারের নেতা এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গেও তাঁর দহরম-মহরম রয়েছে। আর সেই জোর খাটিয়েই রণজিৎ কোনও অনুমতি ছাড়াই সরকারি জায়গায় ছেলের বিয়ের প্যান্ডেল তৈরি করিয়েছেন বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি। স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, এর আগেও রণজিৎ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাঠে প্যান্ডেল করে মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান করেছিলেন। সাধারণ মানুষ অভিযোগ করলেও কোনও কাজ হয়নি। রণজিৎ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাঠ নিজের ইচ্ছামতো ব্যবহার করেন বলেও তাঁরা দাবি করেছেন।
এই বিষয়ে রণজিৎ বলেন, ‘‘আমি কোনও অনুমতি নিইনি। এটা আমার অপরাধ হয়েছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওই মাঠ জঙ্গলে ভর্তি। ছেলের বিয়ের প্যান্ডেল করব বলে সেই জঙ্গল পরিষ্কার করিয়েছি। এর পর ছেলের বিয়ের প্যান্ডেল করিয়েছি। ওই মাঠে আমার মেয়ের বিয়ের প্যান্ডেল করেছিলাম। তখন কেউ বাধা দেয়নি। এই প্যান্ডেল করার আগে আমি বিভিন্ন জায়গায় আলোচনা করেছি। এমনকি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকেরও নিমন্ত্রণ আছে আমার ছেলের বৌভাতে। এখন প্যান্ডেল খুলে নিতে বললে আমাকে তাই করতে হবে।’’
এই বিষয়ে এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য প্রণয় ঘোষচৌধুরী বলেন, ‘‘ওই ভাবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাঠে বিয়ের জন্য প্যান্ডেল করা উচিত হয়নি। আমরা ওঁকে বলে প্যান্ডেল খোলানোর ব্যবস্থা করছি।’’