জীবাণু নাশ করতে এগিয়ে এল পড়ুয়ারা। কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র
শুরুটা হয়েছিল তেহট্ট-২ ব্লকে। এক সঙ্গে পাঁচ জনকে নিয়ে। কিন্তু সময় যত এগিয়েছে ততই প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের মথাব্যথার কারণ হয়েছে তেহট্ট। কারণ, গোটা জেলার মধ্যে এখনও এখানেই করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এখনও পর্যন্ত কারও মৃত্যু না হলেও প্রতিদিন এই মহকুমায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।
বুধবার সকাল সাতটা পর্যন্ত নদিয়া জেলায় ১৩২ জন করোনা আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এর সিংহভাগই পরিযায়ী শ্রমিক। জেলার স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া তথ্য অনুয়ায়ী, জেলার ১৮ টি ব্লকের মধ্যে তেহট্ট-১ ব্লকে সবচেয়ে বেশি ২৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সন্ধান মিলেছে। তাঁদের প্রায় সকলেই ফিরেছেন মহারাষ্ট্র থেকে। কোনও কোনও দিন এখানে এক সঙ্গে ৫ থেকে ৯ জন আক্রান্ত মিলেছে। আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে এর পরে রয়েছে রানাঘাট-২, চাকদহ, তেহট্ট-২, হাঁসখালি ব্লক।
৮ মের পর থেকে নদিয়া জেলায় হু-হু করে বাড়তে শুরু করে করোনা রোগীর সংখ্যা। এক-এক দিনে ১২-১৪ জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসতে থাকে। এঁদের সিংহভাগই পরিযায়ী শ্রমিক। জেলা প্রশাসনের কর্তাদের কথায়, এর মধ্যে মহারাষ্ট্র, গুজরাত, দিল্লি ও তামিলনাডু হটস্পট হওয়ায় সেই রাজ্য থেকে ফেরা শ্রমিকদের মধ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল বেশি। এঁদের মধ্যে আবার সংখ্যার নিরিখে মহারাষ্ট্রে থেকে ফেরা শ্রমিকের সংখ্যাই সিংহভাগ। তেহট্ট-১ ও ২ ব্লকের পাশাপাশি চাকদহ, রানাঘাট-২, হাঁসখালি ব্লক ও শান্তিপুর ব্লকে ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত বেশি।
জেলার স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, “খেয়াল করে দেখুন যে, জেলায় মধ্যে যে সব এলাকা অপেক্ষাকৃত ভাবে পিছিয়ে আছে সেই সব এলাকা থেকে মানুষ অন্য রাজ্যে গিয়েছেন কাজের সন্ধানে। তাঁরাই এখন ফিরে আসতে শুরু করায় এই সব এলাকায় রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। তেমনই পিছিয়ে পড়া এলাকা তেহট্ট। সেখানে কাজের অভাবে প্রচুর মানুষ ভিন রাজ্যে কাজে যান। সেই কারণেই এই সব এলাকাতে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও।”
আরেক কর্তার কথায়, “একটু ভাল করে খেয়াল করলেই দেখা যাবে, তেহট্ট এলাকায় পরিযায়ী শ্রমিকরা বেশি সংখ্যায় ফিরে আসছেন। তাঁদের মধ্যে মহারাষ্ট্র থেকে ফেরা শ্রমিকের সংখ্যা বেশি।”