প্রশান্ত কিশোর।
‘দিদিকে বলো’— কিন্তু বলছে ক’জন! ফল যে তেমন আশানুরূপ নয়, বুধবার তৃণমূলের ভোটকুশলী টিম পিকে’র কাছে একপ্রস্ত কড়া ধমক খেয়ে তারই প্রমাণ দিলেন দলের মুর্শিদাবাদ জেলার মেজ-সেজ একগুচ্ছ নেতা। এমনকি, ওই কর্মসূচির কাজে গড়িমসির জন্য দুই নেতাকে সটান ‘বাদ’ দিতেও কসুর করেনি টিম পিকে।
দিন কয়েক ধরেই পিকে’র দল তাদের নির্বাচনী কৌশলের নানান দিক নিয়ে জেলা নেতাদের সঙ্গে পর্যালোচনা শুরু করেছে। কোন নেতা কতটা দড়, ‘দিদিকে বলো’র সাফল্য ধরে রাখতে কে কতটা কুশলী, জেলায় তাঁদের কাজকর্ম দেখে কত নম্বর দেওয়া যেতে পারে— তা নিয়েই শুরু হয়েছে টিম পিকে’র রিভিউ। আর সেই পর্যালোচনায় ধমক-পিঠ চাপড়ানির পাশাপাশি মুর্শিদাবাদের বেশ কয়েক জন নেতাকে শুনতে হল— ‘আপনাকে আর দিদিকে বলো’র কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে হবে না।’ কলকাতার ওই রিভিউ বৈঠকে এ দিন টিম পিকের সঙ্গে ছিলেন দলের যুব নেতা তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে, দলের মুর্শিদাবাদ জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দুকে অধিকারীকে ওই বৈঠকে দেখা যায়নি।
বিধায়ক থেকে ব্লক সভাপতি স্তরের ১২৬ জন জনপ্রতিনিধি ও দলীয় নেতাকে এ দিন এক সঙ্গে তলব করেছিল টিম পিকে। তাঁদের প্রত্যেকের কাছেই কাজের খতিয়ান চেয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, দু’-পাঁচটা নয়, সকলকে অন্তত দশটি করে গ্রামে গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। জানতে হবে গ্রামের মানুষের হাল-হকিকৎ, শুনতে হবে তাঁদের অভাব-অভিযোগ। ‘দিদিকে বলো’র সেই কর্মসূচির খতিয়ান নিতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, জেলায় সিংহভাগ নেতাই গোটা চারেক গ্রামে পদার্পণ করলেও পিকে’র বেঁধে দেওয়া টার্গেট, দশটি গ্রামে পৌঁছতে পারেননি।
আগামী ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে তাঁদের সেই টার্গেট পূরণের সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পাশাপাশি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, গ্রামে যাওয়ার সময় নেতারা সকলে যেন পিকে’র কিট সঙ্গে নিয়ে যান। যে কিটে থাকছে ‘দিদিকে বলো’র লোগো আঁকা অন্তত দশটি গেঞ্জি এবং ৩০০টি ‘দিদিকে বলো’র নম্বর লেখা কার্ড। টিম পিকে’র নির্দেশ— ‘ব্যাগে যেন দশটা গেঞ্জি থাকে, মাস্ট।’ দেওয়া হয়েছে গ্রামীণ মানুষের অভিযোগ তাঁরা যেন নিজেরাই করেন। নেতারা নিজের মোবাইল থেকে অভিযোগ জানিয়ে দায় সারার চেষ্টা করবেন না।
‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির সাতটি ধাপ। সেই ধাপের সাকুল্যে গোটা তিনেক এখন পর্যন্ত পালন করা হয়েছে। বাকিগুলি এ বার শুরু হবে। সে ব্যাপারে তাই আগাম সতর্ক করা হয়েছে নেতাদের। যার প্রথমটি হল— ভোটকুশলী টিম পিকে’র নির্দেশিত গ্রামের তিনটি পরিবারের কাছে অবশ্যই যেতে হবে জনপ্রতিনিধিদের। মন দিয়ে শুনতে হবে তাঁদের যাবতীয় অনুযোগ। তার পর সে ব্যাপারে রিপোর্ট দিতে হবে পিকে’র টিমের কাছে।