শিক্ষাঙ্গনে পুলিশ, ক্ষুব্ধ সব সংগঠন

দিল্লিতে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ুয়াদের উপরে পুলিশের চড়াও হওয়ার ঘটনায় নিন্দায় সরব হয়েছে সমস্ত ছাত্র সংগঠন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:২৮
Share:

প্রহার: পড়ুয়া পেটানোর এই ছবি ছড়িয়েছে টুইটারে।

দিল্লিতে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ুয়াদের উপরে পুলিশের চড়াও হওয়ার ঘটনায় নিন্দায় সরব হয়েছে সমস্ত ছাত্র সংগঠন। তার মধ্যে টিএমসিপি এবং এসএফআই রয়েছে। যদিও এবিভিপি-র দাবি, ছাত্রছাত্রীদের পরিচয়পত্র জাল করে কিছু লোক অশান্তি করাতেই পুলিশ এই ঘটনা ঘটিয়েছে।

Advertisement

রবিবার বিকেলে নয়াদিল্লির নিউ ফ্রেন্ডস কলোনিতে নতুন নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে বিক্ষো‌ভের পরে সংলগ্ন জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে ছাত্রছাত্রী ও গ্রন্থাগার কর্মীদের উপরে চড়াও হয় পুলিশ। কাঁদানে গ্যাসও ছোড়ে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ক্যাম্পাসের বাইরের বিক্ষোভে কোনও ছাত্রছাত্রী শামিল ছিলেন না।

এই ঘটনার পরেই দেশ জুড়ে নানা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা নিন্দায় মুখর হয়েছেন। প্রতিবাদে রাতেই পথে নেমেছেন যাদবপুর ও প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। তার ঢেউ এসে লেগেছে নদিয়াতেও। সোমবার পর্যন্ত কোনও ছাত্র সংগঠন জেলার রাস্তায় নামেনি।

Advertisement

এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক শান্তনু সিংহের মতে, “দেশে কার্যত জরুরি অবস্থা চলছে। যে ভাবে একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে পুলিশ পড়ুয়াদের উপরে হামলা চালাল, তাতে এটাকে ফ্যাসিবাদ ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না।” টিএমসিপির জেলা সভাপতি সৌরিক মুখোপাধ্যায়ও বলছেন, “এটা আসলে ফ্যাসিবাদের প্রথম ধাপ। বিশ্ববিদ্যালয়ে এই পুলিশি হামলার নিন্দার কোনও ভাষা নেই।’’ পড়ুয়ারা যে সে দিন কোনও অশান্তি করেননি তা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এই যে অস্থিরতা চলছে, তার জন্য দায়ী নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। তিনিই সকলকে আন্দোলনে নামতে বাধ্য করছেন।’’

অমিত শাহের হাতে থাকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন দিল্লি পুলিশ। কিন্তু আরএসএস-এর অনুগামী সংগঠন এবিভিপি-র জেলা প্রমুখ আশিস বিশ্বাস বলছেন, “পুলিশ কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়ুয়াদের লাঠিপেটা করবে, এটা সমর্থনযোগ্য নয়। ছাত্রেরা যদি কোনও অন্যায় বা দেশবিরোধী কাজ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রশাসনকে তা জানিয়ে পদক্ষেপ করবেন। এ রাজ্যের পুলিশ এমন আচরণ করলে যেমন নিন্দা করি, এ ক্ষেত্রেও তা-ই করছি।’’

তবে পুলিশি হামলার আগে ঠিক আগে কী ঘটেছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আশিস। তাঁর দাবি, “যা জানতে পারছি তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে যারা বাস পোড়াচ্ছিল, তাদের কয়েক জন ছাত্রছাত্রীদের পরিচয়পত্র জাল করে সঙ্গে এনেছিল। তা থেকেই পুলিশের ধারণা হয়, ছাত্রছাত্রীরা এই ঘটনায় যুক্ত।’’ যদিও এই তথ্য তিনি কোথায় পেলেন তার সদুত্তর মেলেনি।

বিক্ষোভ-আন্দোলন যুক্ত থাকা বা না-থাকা প্রসঙ্গে এসএফআইয়ের শান্তনু বলেন, “গণতন্ত্রে সকলের মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকে। সেই অধিকার ছাত্রেরাই বুক দিয়ে রক্ষা করেন। তাঁদের উপরে পুলিশি হামলা স্বৈরতন্ত্রের নামান্তর।” নদিয়ায় তাঁরা এই নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি নেবেন বলেও তিনি জানান।

টিএমসিপি-র সৌরিকও বলেন, ‘‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালিয়ে মোদী সরকার এ দেশের সৌভ্রাতৃত্বের পরিবেশ ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। এ রাজ্যে আমরা তা হতে দেব না। পড়ুয়াদের উপরে এই হামলার প্রতিবাদে পথে নামব। সেই মতো সাংগঠনিক স্তরে কথা বলছি।” এবিভিপি অবশ্য জানিয়েছে, এই নিয়ে কোনও প্রতিবাদ কর্মসূচি সংগঠিত করার নির্দেশ তাদের প্রদেশ স্তর থেকে দেওয়া হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement