ফাইল চিত্র।
অনেক সময় অযৌক্তিক কারণ দেখিয়ে রেফার করে দেওয়া হয়। আবার অনেক সময় রেফার করতে দেরিও হয়। মুর্শিদাবাদে এমন অভিযোগ বরাবরই ওঠে হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে। এ বারে প্রসূতিদের অযৌক্তিক রেফার রুখতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। ইতিমধ্যে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের প্রধান সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম প্রসূতি ও সদ্যোজাতদের রেফার রুখতে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করার নিদান দিয়েছেন।
মুর্শিদাবাদের সমস্ত হাসপাতালের ডেপুটি সুপার বা অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারদের নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনও প্রসূতিকে রেফার করা হলে ওই গ্রুপে লেখা হবে।
যার জেরে সব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা সহজেই রেফার হওয়া প্রসূতির বিষয়ে সেখান থেকে জানতে পারবেন এবং তাঁদের ভর্তি করে দ্রুত চিকিৎসা করানোর সুবিধা হবে।মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত এমএসভিপি সুপ্রতীক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনেও রেফার করা হয়। আবার অনেক সময় রোগীর পরিবারের লোকজনেরা চান ভাল চিকিৎসার জন্য বড় হাসপাতালে রেফার করা হোক। তবে স্বাস্থ্য দফতর প্রসূতি ও নবজাতকদের রেফার রুখতে যে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরির পরামর্শ দিয়েছে তা এই জেলাতেও হবে। অন্য হাসপাতালকে নিয়ে আমরাও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করা হবে।’’
আগেই রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা অযৌক্তিক রেফার বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে। রেফার করতে হলে অন্য হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করতে হবে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের সুপারকে। রেফারের জেরে রোগীর ভোগান্তি হলে সুপারদের উপরে তার দায় চাপবে বলে আগেই জানানো হয়েছিল। এবারে প্রসূতি ও সদ্যোজাতদের মৃত্যু কমাতে চাইছে রাজ্য। এ জন্য প্রসূতি ও নবজাতকদের রেফার রুখতে হাসপাতালগুলিকে লাগাম পরাতে চাইছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।
তাই, শুধু হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরিই নয়, প্রয়োজন ছাড়া কলকাতার কোনও হাসপাতাল বা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রসূতি বা নবজাতকদের রেফার করতে নিষেধ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নিকটবর্তী ভাল পরিকাঠামোযুক্ত জেলা বা মহকুমা হাসপাতালে প্রসূতি ও নবজাতকদের পাঠানোর নিদান দিয়েছেন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রধান সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম। মাঝে মধ্যেই অযৌক্তিক কারণে রেফারের অভিযোগ ওঠে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও।
অভিযোগ, অনেক সময় অযৌক্তিক কারণে রোগীদের কলকাতায় রেফার করে দেওয়া হয়। আর রোগীদের কলকাতায় গিয়ে হয়রানির শিকার হতে হয়। একই অভিযোগ ওঠে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন মহকুমা ও গ্রামীণ বা ব্লক হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে।
যার জেরে কলকাতার হাসপাতালগুলিতে যেমন ভিড় বাড়ে, তেমনই বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও ভিড় বাড়ে। তবে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, রেফার কমানোর জন্য তাঁরা আগে থেকেই হাসপাতালে মনিটরিং করছেন। যার জেরে আগের থেকে রোগী রেফারের সংখ্যা কমেছে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।