বিধায়কের বাড়ির চারপাশে, ঝোপঝাড়ে তল্লাশি। নিজস্ব চিত্র
বাংলার নতুন বছরের প্রথম দিনের আনন্দ যেন অনেকটাই ফিকে হয়ে গেল দিনভর বড়ঞার বিধায়ক তৃণমূলের জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে সিবিআই অভিযানে। শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে জীবনকৃষ্ণের বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি শুরু করেছে। শনিবার দিনভর তল্লাশি জারি থাকতেও দেখা গিয়েছে।
সারা জেলা জুড়েই তার প্রভাব পড়েছে। অনেকেরই আশঙ্কা বিধায়ককে শেষ পর্যন্ত গ্রেফতারই করা হবে। আন্দি গ্রামের বুক চিড়ে চলে গিয়েছে কান্দি-সাঁইথিয়া রাজ্য সড়ক। ওই রাস্তার দু’ধারে আন্দির বাজার। সেখানে বছরের প্রথম দিন দোকানে পুজো-পাঠ হলেও উৎসবের মেজাজে ওই বাজারে হালখাতা হলেও ওই দিন সেই মেজাজে হালখাতা হতে দেখা যায়নি। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কথায় গ্রামের ছেলে শুধু নই, জীবনকৃষ্ণ একজন বিধায়ক। তাঁর বাড়িতে সিবিআই যে ভাবে দু’দিন ধরে তদন্ত করছে সেখানে বাইরের লোকজন ওই বাজারে আসছে না। শুধু তৃণমূলের নেতা কর্মীদের ভিড়। তাতে ব্যবসা হচ্ছে না। তাই হালখাতায় তেমন জোড় নেই। ব্যবসায়ী পরেশ সিংহ, সান্তু দে বলেন, “বছরের প্রথম দিন এমনিতেই বঙ্গবাসী উৎসবের মতো দিনটি পালন করেন। যেখানে স্থানীয় বাসিন্দারা বাড়ি থেকে বেড়িয়ে বাজার মুখো হন ওই দিন সেই সংখ্যাটি খুব কম।”
বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সভাপতি শাওনি সিংহ রায় বলেন, “জীবনকৃষ্ণ সাহা এক জন বিধায়ক। তাঁর এলাকার লোকজন তাঁর পাশে থাকবেন। নববর্ষের দিন এলাকার মানুষ কিছুটা হলেও আনন্দে থাকেন, সেটা সিবিআইয়ের তদন্তের কিছুটা ভাঁটা পড়েছে।”
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রেই খবর, জীবনকৃষ্ণকে নিজের বাড়ির দোতলায় পর্যন্ত উঠতে দেয়নি সিবিআই। বিকেলের দিকে তিনি খানিক অসুস্থও বোধ করেছেন বলে সূত্রের খবর। সিবিআই সূত্রের খবর, পুকুরে যে দু’টি মোবাইল বিধায়ক ফেলে দিয়েছেন, সেই দু’টি উদ্ধারের পরেই বিধায়ককে গ্রেফতার করা হতে পারে। ওই দু’টি মোবাইলে প্রচুর তথ্য রয়েছে বলে সূত্রের দাবি।
সেই সঙ্গেই, তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, দলে জীবনকৃষ্ণের ‘বন্ধু’র সংখ্যা কি কমে গিয়েছে? তবে জেলা সভাপতি শাওনি বলেন, ‘‘জীবনকৃষ্ণের বাড়িতে তল্লাশি পুরোই আইনি বিষয়। এর সঙ্গে দলের সম্পর্ক নেই। ভোটেও এর প্রভাব পড়বে ন।’’