সভাস্থলে যজ্ঞ। নিজস্ব চিত্র।
আজ বাদে কাল, শনিবার আসছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা। নবদ্বীপ চটির মাঠে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি ওই সভাতেই এ রাজ্যে বিজেপির পরিবর্তন যাত্রার সূচনা হওয়ার কথা। কিন্তু সেই মাঠের চারপাশে মাঠ সংলগ্ন রাস্তা ও বাড়িতে দলীয় পতাকা লাগিয়ে দেয় তৃণমূল। এই নিয়ে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় বৃহস্পতিবার অবশ্য তারা মাঠের ধারের পতাকা খুলে নিয়েছে।
বিজেপির অভিযোগ, তাদের প্রতি মানুষের সমর্থন দেখে ভয় পেয়ে সভা আটকাতে তৃণমূল এই কাজ করেছিল। ভেবেছিল, পতাকা খোলা নিয়ে একটা অশান্তি হবে এবং সভা বানচাল হবে। নবদ্বীপের তৃণমূল বিধায়ক পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা অবশ্য বলছেন, তৃণমূলের কর্মীরা এ কাজ করেছেন বলে কোনও খবর তাঁর কাছে নেই। তাঁর কথায়, “ওখানে কারা আমাদের দলীয় পতাকা ঝুলিয়েছেন তা বলতে পারব না। তবে দলের তরফে এমন নির্দেশ কাউকে দেওয়া হয়নি।” নবদ্বীপ শহর তৃণমূলের সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ পাল বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। খোঁজ নেওয়া হচ্ছে কারা এ কাজ করেছেন।”
বিজেপির অভিযোগ, বুধবার বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ দলের রাজ্য এবং জেলা নেতৃত্ব যখন চটির মাঠে সভার প্রস্তুতির কাজ করছিলেন সেই সময়ে এক দল তৃণমূল সমর্থক মাঠের চারপাশে তৃণমূলের পতাকা লাগাতে শুরু করেন। মাঠে উপস্থিত বিজেপি সমর্থকেরা প্রতিবাদ করলেও তাঁরা নিরস্ত হননি বলে অভিযোগ।
সেই সময়ে মাঠে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির পরিবর্তন যাত্রার ভারপ্রাপ্ত সাংসদ সুকান্ত মজুমদার, নবদ্বীপ জোনের কো-অবজ়ার্ভার অমিতাভ দাস, কল্যাণ চৌবে, উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আশুতোষ পাল প্রমুখ। পরিবর্তন যাত্রায় নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নবীন চক্রবর্তীর অভিযোগ, মাঠের সীমানা বরাবর যত সিমেন্টের স্তম্ভ আছে সব ক’টির গায়ে তৃণমূলের দলীয় পতাকায় ঝুলিয়ে দিতে শুরু করেন কয়েক জন। তিনি বলেন, “জানি না, এটা কোন ধরনের রাজনৈতিক শিষ্টাচার। এতে কি তৃণমূলের গৌরব বৃদ্ধি পেল? এর বিচার মানুষ ঠিক করবেন।”
নবীনের আরও বক্তব্য, “ওঁরা যদি ভেবে থাকেন যে, আমরা পতাকা খুলে দিয়ে মারামারি করব তা হলে ভুল অঙ্ক কষেছেন। আমরা রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করব। মানুষের সামনে তুলে ধরব ভয় পেয়ে বিজেপিকে আটকাতে তৃণমূল কতটা নীচে নামতে পারে।” যদিও সে সবের আর প্রয়োজন হয়নি। পরে মাঠের ধার থেকে তৃণমূলের পতাকা সরিয়ে নেওয়া হয়।
বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি গৌতম পালের দাবি, “তৃণমূল একটা ফাঁদ পেতেছিল। কিন্তু আমরা তাতে পা না-দেওয়ায় সেটা ওদের কাছে ব্যুমেরাং হয়ে গেল। লোকের কাছে ওরা হেয় প্রতিপন্ন হল এবং লোকে বুঝতে পারল তৃণমূলের অপসংস্কৃতির স্বরূপ।”