প্রতীকী ছবি।
ধন্দে পড়েছেন তাঁরা। দু’দিন আগেও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্টের (ইডি) আধিকারিকরা ‘শূন্য হাতে’ ফিরে গেলেও সুন্দিপুর গ্রামের চেহারাটা বদলে গিয়েছে রাতারাতি।
আঁটঘাট বেঁধে একটি বেআইনি সংগঠনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লেনদেনের উৎস খুঁজতে বৃহস্পতিবার ওই গ্রামের এক অস্থায়ী ব্যাঙ্ককর্মীর বাড়িতে হানা দিয়েছিলেন ইডি-র আধিকারিকরা। ডাকা হয়েছিল ওই বেসরকারি ব্যাঙ্কের ম্যানেজার সায়ন্তন সরকারকেও। দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডি-র আধিকারিকরা। তবে কাউকে গ্রেফতার না করে, এমনকি ওই অস্থায়ী ব্যাঙ্ককর্মী লেনেদেনে জড়িত কিনা, স্পষ্ট না করেই ফিরে যান ইডি কর্তারা। ফলে ধোঁয়াশা কাটছে না গ্রামবাসীদের। মুখে স্বীকার না করলেও ‘ভুল করেই’ ইডি কর্তারা এসেছিলেন বলে দাবি বেসরকারি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের। তাঁরা এর জন্য ইডি-র ‘দুর্বল হোমওয়ার্ক’কেই দুষছেন। জানা গিয়েছে, ২০১৪ সাল থেকে ওই ব্যাঙ্কের বিজনেস করেসপন্ডেন্ট হিসেবে কাজ করছেন ওই অস্থায়ী ব্যাঙ্ককর্মী। ব্যাঙ্ক অনুমোদিত একটি অ্যাকাউণ্ট থেকে সিএসপি পদ্ধতিতে টাকা তোলা ও জমা দেওয়ার কাজ করেন। মূলত যাঁরা ব্যাঙ্কে আসতে পারেন না বা সই-সাবুদ করতে পারেন না, তাঁরা নিজেদের আধার নম্বর দিয়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে ওই অস্থায়ী কর্মী মারফত টাকা তোলা ও জমা দেওয়ার কাজ করেন। ওই অ্যাকাউণ্টে ২০১৯ সালে কেউ নিষিদ্ধ সংগঠন পিএফআইয়ের (পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া) অ্যাকাউন্টে কয়েক হাজার টাকা পাঠিয়েছিলেন। আবার ২০১৮ ও ২০১৯ সালে দু’বারে আরও কয়েক হাজার টাকা ওই ব্যক্তির নামে দু’টি চেকের মাধ্যমে জমা পড়ে পিএফআইয়ের অ্যাকাউন্টে। তবে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দাবি, নাম এক হলেও দুই ব্যক্তি আলাদা। ‘হোমওয়ার্ক না করে’ বেআইনি আর্থিক লেনদেনে ইডি তাঁদের এক কর্মীর নাম জড়ানোয় গ্রাহকের মনে অবিশ্বাস জন্মাতে পারে বলে আশঙ্কা ব্যাঙ্কের। ব্যাঙ্কের শাখা ম্যানেজার সায়ন্তন সরকার ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “আমি কী বলব। ইডি-কেই জিজ্ঞাসা করুন ওঁরা কেন এসেছিলেন।” স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল কাজি বলেন, “ওই ব্যক্তি কোনও বেআইনি কাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন, বিশ্বাস করা কঠিন। তবে কেন্দ্রের তদন্তকারী স্পষ্ট করে কিছু না বলে যাওয়ায় সে বিষয়ে ধন্দও কাটছে না।” তবে ওই অস্থায়ী ব্যাঙ্ককর্মী বলেন, “আমি নির্দোষ। আমার ভাবমূর্তি ইডি-র জন্য ধাক্কা খেয়েছে। ওঁরা যাওয়ার আগে সব স্পষ্ট করে বলে যেতে পারতেন।’’