হাসপাতালে আহতরা। নিজস্ব চিত্র।
তার ঘর থেকে টাকা চুরি করেছে মা ও বাবা। এই সন্দেহে মাকে শাবল দিয়ে পিটিয়ে মারল ছেলে ও তার বৌ।
মাকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর আহত হলেন বাবা সহ ৪ জন। তাঁদের জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মৃতা মায়ের নাম পাতানি বিবি (৬০)। বাবা নুরুল শেখ। বাড়ি রঘুনাথগঞ্জ থানার পশ্চিম চরকা গ্রামে।
বুধবার রাতে ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত বড় ছেলে ও তার স্ত্রী গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় এখনও তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ জানায়, নুরুলদের তিন ছেলে। সকলেই পাশাপাশি বাড়িতে আলাদা থাকে। অভিযুক্ত বড় ছেলে সুরাজ শেখ ও স্ত্রী শুকতারা বিবির দিন কয়েক আগে কিছু টাকা চুরি যায়। বাবা, মা সেই টাকা চুরি করেছে বলে অভিযোগ দায়ের করায় পুলিশ তাদের বাড়িতেও যায় তদন্তে। নিষেধ করে যায়, অশান্তি না করতে।
নুরুল শেখ বলেন, ‘‘ছেলে সন্দেহ করে আমি ও তার মা মিলেই নাকি তার টাকা চুরি করেছি। এ নিয়ে অশান্তি শুরু হয় বাড়িতে। ছেলে থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে আমাদের দুজনের নামে অভিযোগও করে আসে। পুলিশও আসে বাড়িতে। কিন্তু চুরির কোনও প্রমাণ না পেয়ে ফিরে যায়।’’
কান্নায় ভেঙে পড়ে বাবা বলেন, "আমি বড় ছেলেকে বার বার বুঝিয়েছি। খেতে না পেলেও তোদের টাকা কখনই চুরি করব না। কিন্তু ছেলে শাসাচ্ছিল টাকা ফেরত না পেলে কেটে ফেলবে আমাদের বলে। কিন্তু সত্যি সত্যিই যে মাকে টাকা চুরির সন্দেহে এভাবে শাবল দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলতে পারে ছেলে তা কল্পনাও করতে পারিনি।’’
আহত ছেলে রুহুল শেখ জানান,
‘‘বুধবার সকালেই সুরাজের বাড়িতে আসে তার কয়েকজন আত্মীয়। তাদের সামনেই বাবা, মায়ের সঙ্গে দাদা ও বৌদি অশান্তি শুরু করে দুপুর থেকেই। রাতে তার দুই ভাই কাজ সেরে বাড়ি ফিরে এসে বাবা, মায়ের সঙ্গে দাদা বৌদির অশান্তির কথা জানতে পেরে তার প্রতিবাদ করে। অশান্তি চরমে ওঠে। অভিযোগ, তখনই দাদা ও বৌদি একটি শাবল ঘর থেকে এনে মাকে তা দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করতেই মা লুটিয়ে পড়েন মাটিতে। আহত হন বাবাও। তাকেও মারধোর করা হয়। দাদাকে ঠেকাতে গিয়ে মার খায় তার দুই ভাই ও এক ভায়ের বৌও।’’