Sialmari river

নদীর বুকে বাড়ি-রাস্তা, বাঁধ দিয়ে চাষ

নদী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূলত পদ্মা সরে যাওয়ার ফলেই এই নদী তার গতি হারিয়েছে। আর গতি হারানোর ফলে সাধারণ মানুষ একটু একটু করে দখল করতে শুরু করেছে নদীকে।

Advertisement

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

ডোমকল শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২৩ ০৬:৩৬
Share:

শিয়ালমারি নদীর হাল এমনই।

পদ্মার জলাভূমি থেকেই উৎপত্তি হয়েছিল শিয়ালমারি নদীর। রানিনগরের শিয়ালমারি গ্রামের কাছে তার উৎপত্তিস্থল এখন খুঁজে পাওয়াই দায়। নদীর বুকে তৈরি হয়েছে বাড়ি, কোথাও আবার পুকুর তৈরি করে চলছে মাছ চাষ। আবার কোথাও বাঁধ দিয়ে তৈরি হয়েছে এপার ওপারে যাতায়াতের রাস্তা। এভাবেই সরকারি উদাসীনতায় এবং সাধারণ মানুষের নদী দখলের ফলে জেলার মানচিত্র থেকে প্রায় মুছে যেতে বসেছে শিয়ালমারি নদী। অথচ এক সময়ে এই নদী দিয়েই চলত বাণিজ্য। স্টিমার এবং বড় বড় নৌকার মাধ্যমে এই নদী পথেই কলকাতা এবং রাজশাহীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারতেন এলাকার মানুষ। এমনকি এই নদীকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে একাধিক গঞ্জ থেকে বাজার।

Advertisement

নদী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূলত পদ্মা সরে যাওয়ার ফলেই এই নদী তার গতি হারিয়েছে। আর গতি হারানোর ফলে সাধারণ মানুষ একটু একটু করে দখল করতে শুরু করেছে নদীকে। বর্ষাকালে কিছুটা জল থাকলেও স্রোত থাকে না নদীতে। কারণ নদীর বুকে মানুষ নিজের সুবিধা মতো তৈরি করে নিয়েছে বাঁধ। মূলত ফেরিঘাটগুলিতে মাটি দিয়ে পথ তৈরি করা হয়েছে সাধারণ মানুষের যাতায়াতের জন্য। সেই বাঁধে কখনও কখনও পঞ্চায়েত উদ্যোগী হয়ে বিছিয়ে দিয়েছে ইট। ফলে কেবল সাধারণ মানুষ নন, যাঁদের এই নদীকে রক্ষা করার কথা ছিল, বাঁচানোর কথা ছিল, তাঁরাও হয়তো অজান্তেই নদীর বুকে বাঁধ তৈরিতে সহায়তা করেছে।

নদী বিশেষজ্ঞ সুপ্রতিম কর্মকার বলছেন, ‘‘মূলত পদ্মা সরে যাওয়ার ফলেই শিয়ালমারিতে আর জল পড়ে না। আর নদীতে জল না থাকার ফলেই শুরু হয়েছে দখলদারি। কোথাও নদীর মাঝে তৈরি হয়েছে বাড়িঘর, কোথাও আবার পুকুর তৈরি করে হচ্ছে মাছ চাষ। আমাদের সকলের উদাসীনতায় হারিয়ে যাচ্ছে নদী।’’ জেলার আরও এক নদী বিশেষজ্ঞ সূর্যেন্দু দে বলছেন, ‘‘যে নদী আমরা দখল করছি, সেই নদীর জন্যই একটা সময় কাঁদতে হবে আমাদের। যে ভাবে নদী দখল হচ্ছে, প্রকৃতি কখনও ক্ষমা করবে না। জেলার গুরুত্বপূর্ণ একটা নদী মানচিত্র থেকে মুছে যেতে বসেছে।" ডোমকলের বিধায়ক তৃণমূলের জাফিকুল ইসলাম বলছেন, "পুরসভার উদ্যোগে কিছুটা অংশ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী দিনে শিয়ালমারি সংস্কারের জন্য আরও বড় উদ্যোগ নিতে হবে আমাদের।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement