ফাইল চিত্র
তিন মাসের মধ্যে দোকান ঘর করে দেওয়া হবে— এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়ার দু’বছর পার হতে চললেও কর্মতীর্থ বাজারের কাজ শেষ হয়নি। যার জেরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও বহরমপুরে চুঁয়াপুর রেলওয়ে উড়ালপুলের কাছে উচ্ছেদ হওয়া ব্যবসায়ীরা আজও দোকান ঘর পাননিবলে অভিযোগ।
অভাবে তাঁদের কেউ এখন টোটো চালান, কেউ ফুটপাতে ব্যবসা করেন। কেউ ঘুরে ঘুরে হকারিও করছেন। আর অর্থ কিংবা অন্য সমস্যায় যাঁরা এসব কাজে নামতে পারেননি, তাঁরা ঘরে বসেই দিন কাটাচ্ছেন অভাবে। রাজনীতির কারবারিদের একাংশের ধারণা, পুরভোটের আগে কর্মতীর্থ বাজার চালুর দাবি জায়গা করে নেবে আলোচনায়।
এ নিয়ে বহরমপুর পুরসভার প্রশাসক তথা বহরমপুরের মহকুমাশাসক দীপাঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তিনি ফোন ধরেননি। উত্তর দেননি এসএমএসেরও। তবে পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক শাহজাহান বলেন, ‘‘ঠিকাদারকে আংশিক করে কাজের অর্থ দেওয়া হচ্ছে। তারপর কাজ হচ্ছে। ফের টাকা এসেছে। টাকা মেটানোর জন্য হিসেবও চলছে। শীঘ্রই ওই কাজ শুরু হবে।’’
বহরমপুর পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সঞ্চারিকা ও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মাঝখান দিয়ে স্টেডিয়ামের দিকে একটি রাস্তা গিয়েছে। ওই রাস্তার একপাশে সরকারি জমি রয়েছে। ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে প্রায় ৬৬ শতক জমি জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর পুর দফতরকে হস্তান্তর করেছিল। তার পরে সেখানে কর্মতীর্থ বাজারের কাজ শুরু হয়। সেখানে প্রায় ২৪০টি দোকান ঘরের কাজ শুরু হয়। তবে পুজোর পর থেকে সেই কাজ অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে আছে। যার জেরে উচ্ছেদ হওয়া ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়েছেন।
প্রস্তাবিত কর্মতীর্থ বাজারের জায়গায় মোটরবাইক সারানোর গ্যারাজ ছিল রাজু শেখের। উচ্ছেদে তাঁর সেই গ্যারাজ ভাঙা পড়ে। বর্তমানে খোলা আকাশের নীচে পলিথিন খাটিয়ে বাইক-গাড়ি সারাইয়ের কাজ করছেন তিনি। রাজু বলেন, ‘‘ওই বাজার চালু হওয়ার আশায় দিন গুনছি। কিন্তু কবে যে তা চালু হবে!’’
ওই চত্বরেই নির্মল চক্রবর্তীর ডেকরেটর্স সামগ্রীর দোকান ছিল। সেটিও ভাঙা হয়। নির্মল বলেন, ‘‘দোকান ভেঙে ফেলার পর কাজ নেই। বার বার তাগাদা দিয়েও বাজারের কাজ শেষ করেনি। কবে ওই জায়গায় দোকান পাব, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই।’’ পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, চুঁয়াপুরে রেলওয়ে উড়ালপুলের জন্য চুঁয়াপুরের কদমতলা থেকে বিবেকানন্দ মূর্তি পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারের ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করা হয়। তেমনই মেডিক্যাল কলেজের পাশে হকারের উচ্ছেদ করা হয়। সব মিলিয়ে প্রায় ২০০ ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হন।