Fake voters of Krishnanagar

বেপাত্তা বহু ‘ভুয়ো’ ভোটার

গত বছর নভেম্বর মাসে খসড়া ভোটের তালিকা প্রকাশ পাওয়ার পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সেই ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Advertisement

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৫ ০৮:১৯
Share:
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

তারা সবাই এই প্রথম ভোটার তালিকায় নাম তুলেছেন। কিন্তু তাদের কারও বয়স ৬০ তো কারও ৭৫ বছর। অভিযোগ, এদের বেশির ভাগেরই কোনও হদিস মিলছে না। ভূতুড়ে ভোটার হিসাবে দাবি উঠতে শুরু করেছে। এমনটা কী ভাবে সম্ভব হল তা নিয়ে প্রশাসনিক মহলে রীতিমত শোরগোল পরে গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চর্চাও। গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন জেলাশাসক।

Advertisement

গত বছর নভেম্বর মাসে খসড়া ভোটের তালিকা প্রকাশ পাওয়ার পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সেই ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই কাজটি করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই বিভিন্ন ধরণের অসঙ্গতি ধরা পড়তে শুরু করেছে। কিন্তু একটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এক সঙ্গে এতগুলি ‘বিতর্কিত’ ভোটার চিহ্নিত হওয়ার অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে প্রশাসন। সম্প্রতি এই বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসকের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ হওয়ায় সেই আরও অনেকটাই অস্বস্তি বেড়ে গিয়েছে।

কৃষ্ণনগর ২ ব্লকের নওপাড়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ভোটার তালিকায় এমন প্রায় একশ জনের নাম পাওয়া গিয়েছে যাদের কারও কারও অস্তিত্ব নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছে। আবার কেউ কেউ হয়ত বছর তিন-চার আগে সংশ্লিষ্ট ঠিকানায় বসবাস শুরু করেছে। যাদের মধ্যে বেশিরভাগেরই বয়স চল্লিশের উপরে। জানা গিয়েছে, এই এাদের মধ্যে একটা বড় সংখ্যা আছে যাদের বয়স ৬০ থেকে ৭৫ বছরের মধ্যে বলে অভিযোগ। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, বর্তমানে যেখানে ১৮ বছর হয়ে গেলেই ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য প্রশাসনের তরফেই উদ্যোগ নেওয়া হয়, যেখানে ২৪-২৫ বছর হয়ে গেলেই ভোটার তলিকায় নাম তুলতে গিয়ে কঠিন নিয়মের আবর্তে ঘুরপাক খেতে হয় সেখানে একটা পঞ্চায়েত এলাকায় এত জন বয়স্ক মানুষ ভোটার তালিকায় নাম না তুলে বছরের পর বছর কাটিয়ে দিলেন। আবার তারা এত বেশি বয়সে এসে কী ভাবে এত সহজে ভোটার তালিকায় তাদের পরপর নাম তুলে ফেললেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দা প্রদেশ কংগ্রেসের সদস্য আবদুর রহিম শেখ গোটা বিষয়টি জেলাশাসক ও নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছেন। এ দিন তিনি বলেন, “এত বেশি বয়সে এত জনের ভোটার তালিকায় নাম তুলতে দেখে আমাদের সন্দেহ হয়। নাম ও ঠিকানা ধরে ধরে খোঁজ করতে গিয়ে দেখি বেশিরভাগেরই খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘কেউ কেউ খুব বেশি হলে তিন থেকে চার বছর সেই ঠিকানায় বসবাস করছে।’’ এখানেই প্রশ্ন উঠছে, তারা যদি ভারতীয় নাগরিকই হয়ে থাকেন তাহলে এতদিন কোথায় ছিলেন? কেনই বা এত দিন ভোটার তালিকায় নাম তুললেন না?

আবদুর রহিম এ দিন প্রশ্ন তোলেন, ‘‘যাদের কোনও অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তারা কারা? কী ভাবে-কিসের ভিত্তিতে ওই সমস্ত নাম এত সহজে ভোটার তালিয়ায় উঠে গেল?” তিনি বলেন, “সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে আমাদের সন্দেহ হচ্ছে যে এর ভিতরে বিরাট গরমিল আছে।”

জেলাশাসক এস অরুণপ্রসাদ বলেন, “গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement