—প্রতীকী চিত্র।
এক দিকে জাল ওষুধের রমরমা আর একদিকে ওষুধের দামের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। এই দু’য়ের জ়াতাকলে কার্যত নাজেহাল অবস্থা সাধারণ মানুষের। মঙ্গলবার থেকে নতুন করে ৭৪৮টি ওষুধের দাম বেড়েছে। কেন্দ্র সরকারের তরফে এতগুলি গুরুত্বপূর্ণ ও অতিপ্রয়োজনীয় ওযুধের দাম বাড়ানোর অনুমতি দেওয়ায় চিকিৎসা ক্ষেত্রে বড়সড় প্রভাব পড়তে চলেছে বলে আশঙ্কা করছেন ওষুধ ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে চিকিৎসকরাও। কারণ এভাবে ওষুধের দাম বাড়তে থাকলে সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা পরিষেবা থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হবে বলে তাঁরা মনে করছেন।
সম্প্রতি জাল ওষুধ বা মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধের রমরমা ব্যবসা সামনে এসেছে। যা নিয়ে চিকিৎসক মহলে রীতিমত শোরগোল পড়েছে। ওষুধের ব্যবসায়ীরাও এই জাল ওষুধ বিক্রির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন। তাঁদের সংগঠন বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিডিএ) তরফে মানুষকে সচেতন করার জন্য নানা ধরণের কর্মসূচি নেওয়া শুরু হয়েছে। এই সংকটের মধ্যে মঙ্গলবার থেকে এতগুলি ওষুধের বিক্রয় মূল্য বা এমআরপি-র উপর ১.৭৪ শতাংশ হারে দাম বৃদ্ধির সবুজ সংকেত দিয়েছে ‘ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথরিটি’। যা নিয়ে সর্বস্তরে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
ওষুধ ব্যবসায়ীদের অনেকেই মনে করছেন, এভাবে দাম বাড়তে থাকায় ওষুধ ক্রমশ সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। ফলে অনেকেই অর্থাভাবে ঠিকমত চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারছেন না। কৃষ্ণনগরের এক ওষুধের দোকানের মালিক সুব্রত মিত্র বলেন, “মানুষের আয় কমছে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশ ছোঁয়া। সমস্ত খরচ মিটিয়ে বেশিরভাগ মানুষের হাতে আর ওষুধ কেনার টাকা থাকে না। অনেকেই তাই ওষুধের পুরো কোর্স শেষ করতে পারেন না। মাঝপথে চিকিৎসা থামিয়ে দিতে হয়। প্রেসক্রিপশনে লেখা ওষুধের কিছুটা কিনে ফিরে যান। বাকিটা তাঁরা হয়তো আর খানই না। এভাবে দাম বাড়লে এই সংখ্যাটা কিন্তু বাড়তে থাকবে।” একই বক্তব্য কৃষ্ণনগরের একাধিক ওষুধ সংস্থার স্ককিস্ট গোপীনাথ দে’র। তিনি বলেন, “ওষুধের দাম বাড়লে সাধারণ মানুষ সত্যিই খুব সমস্যায় পড়ে যান। এক্ষেত্রে বেশি ছাড়ের প্রলোভন দেখিয়ে জাল ওষুধ বিক্রির রমরমা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থেকে যায়। আমরা সেই আশঙ্কাই করছি। সরকারের উচিত দাম না বাড়িয়ে জাল ওষুধ বিক্রি বন্ধের ওপর জোর দেওয়া।”
ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)-এর কৃষ্ণনগর শাখার সম্পাদক সঙ্গীতা রায়চৌধুরী বলেন, “অন্যান্য জিনিসের সঙ্গে ওষুধের দামও বাড়ছে। এতে সাধারণ মানুষ চিকিৎসা করাতে এসে সমস্যায় পড়ছেন। অনেকেই তো দেখছি ওষুধের পুরো কোর্স শেষ করতে পারছেন না। এতে করে চিকিৎসকদেরও চিকিৎসা পরিষেবা দিতে সমস্যা হবে।”