—প্রতীকী চিত্র।
মুর্শিদাবাদের বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ আগেও হয়েছে। তবে গত জুন থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার পরে অনুপ্রবেশ নিয়ে নতুন করে মাথাব্যথা শুরু হয়েছে। দিন কয়েক আগে ‘আনসারুল্লা বাংলা টিমে’র (এবিটি) জঙ্গি সন্দেহে কেরল থেকে শাব শেখ নামে এক বাংলাদেশি গ্রেফতার হয়েছিল। পরে দু’ দফায় হরিহরপাড়া এবং নওদা থেকে মোট চার জন জঙ্গি সন্দেহে ধরা পড়েছে। এরই মধ্যে বুধবার নতুন করে জল্পনা ছড়িয়েছে, এবিটি-র প্রধান জসিমুদ্দিন আনসারিও গত মাসে নওদা থেকে ধৃত দু’জনের গ্রামে এসেছিলেন।
এত অনুপ্রবেশ কী ভাবে হচ্ছে? জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদে বাংলাদেশ সীমান্তের বিস্তীর্ণ এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নেই। যার জেরে সেই অরক্ষিত এলাকা দিয়ে দালাল মারফত অনুপ্রবেশ হচ্ছে। গত তিন মাসে মুর্শিদাবাদের দু’টি পুলিশ জেলায় অন্তত ৯০ জন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী গ্রেফতার হয়েছে। কাঁটাতারের বেড়া না থাকায় তারা সহজেই সীমান্ত পেরোয়।
সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদে ১২৫.৩৫ কিমি বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। তার মধ্যে ৪২.৩৫ কিমি স্থলভাগ। বাকি সীমান্ত এলাকা নদী দিয়ে ঘেরা। অনেক আগে থেকে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া শুরু হলেও আজও সেই কাজ শেষ হয়নি। জেলার অধিকাংশ এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নেই।
সূত্রের খবর, নিমতিতা থেকে জলঙ্গি পর্যন্ত সীমান্ত এলাকার লালগোলা, ভগবানগোলা ২ ব্লক এবং রানিনগর ২ ব্লকে সামান্য অংশে কাঁটাতারের বেড়া রয়েছে।
মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার জন্য জমি কিনে বিএসএফকে দেওয়ার কাজ গুরুত্ব সহকারে করা হচ্ছে।’’
কেন্দ্রীয় পূর্ত দফতর (সিপিডব্লিউ) মুর্শিদাবাদে বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজ করছে। মুর্শিদাবাদে কত কিমি কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে ও কতটা বাকি, তা নিয়ে সিপিডব্লিউয়ের এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রঞ্জন চক্রবর্তী মন্তব্য করেননি।
বর্তমানে মুর্শিদাবাদে বাংলাদেশ সীমান্তের ৫০ কিমি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরার অনুমোদন মিলেছে। ৫০ কিমির মধ্যে আগে ২৫ কিমি কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার জন্য সরাসরি জমি কেনার অনুমোদন দিয়েছিল রাজ্য সরকার। তার মধ্যে ২০ কিমি জমি কেনার জন্য জেলায় টাকা এসেছে। সেই ২০ কিমি জমি অধিগ্রহণের কাজ বিভিন্ন স্তরে রয়েছে। কোথাও জমি কেনার কাজ শেষে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে, কোথাও বা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিএসএফকে বেড়া দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বাকি ২৫ কিমির জমি কেনার বিষয়ে রাজ্যের মন্ত্রিসভা থেকে সম্প্রতি অনুমোদন পেয়েছে। সেই এলাকা বিএসএফ, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর ও কেন্দ্রীয় পূর্ত দফতর (সিপিডব্লিউ) পরিদর্শন করেছে।