Jiban Krishna Saha

সিবিআই পুরস্কার দেবে না? জানতে চান জীবনকৃষ্ণের মোবাইল খুঁজে বার করে ‘নায়ক’ বড়ঞার সঞ্জীব

প্রতি দিন সকাল হলে কাজের খোঁজে বেরিয়ে পড়েন সঞ্জীব বাগদি। রাজমিস্ত্রির জোগাড়ে থেকে বাড়ির নালা সাফাই— ছ’জনের সংসার চালাতে সব কাজই করেন তিনি। সেই সঞ্জীব এখন নায়ক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বড়ঞা শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৩ ১৭:৫৫
Share:

ফোন খুঁজে পেয়ে নায়ক সঞ্জীব বাগদি। — নিজস্ব চিত্র।

পুকুরের পাশে খেজুর গাছ। তার আশপাশ ভর্তি পাঁকে। তার মধ্যে কিছু ক্ষণ হাতড়াতেই ‘জিনিস’টা ঠেকেছিল মুর্শিদাবাদের বড়ঞার আন্দি গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জীব বাগদির বাঁ হাতে। এই সেই ‘জিনিস’ যা লাগাতার ৬৬ ঘণ্টা ধরে পুকুরে তল্লাশি চালিয়েও হাতে পাননি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই)-এর আধিকারিকরা। সোমবার এমন ‘সফল’ অপারেশনের পর সিবিআইয়ের সূত্র বলছে, সঞ্জীবের খুঁজে বার করা সেই ‘জিনিস’টি ‘প্যান্ডোরার বাক্স’ হয়ে উঠতে পারে বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার কাছে। বাঁ হাত দিয়ে পাঁক হাতড়ে সঞ্জীব বার করে এনেছিলেন তৃণমূল বিধায়কের দ্বিতীয় ফোনটি, যার সন্ধানে হন্যে হয়ে নেমেছিল সিবিআই। মোবাইল খুঁজে পাওয়া সেই সঞ্জীবকে ঘিরে এখন ভিড় উৎসাহীদের।

Advertisement

প্রতি দিন সকাল হলে কাজের খোঁজে বেরিয়ে পড়েন সঞ্জীব। রাজমিস্ত্রির জোগাড়ে থেকে বাড়ির নালা সাফাই— ৬ জনের সংসার চালাতে সব কাজই করেন তিনি। মজুরি বাবদ কোনও দিন পান ২০০ টাকা, কোনও দিন আয় ৩০০ টাকা। আবার কোনও দিন মাত্র ৫০ থেকে ১০০ টাকা হাতেই তাঁকে ফিরতে হয় বাড়ি। এ সব কিছু ভুলে এখন তৃপ্তির হাসি সঞ্জীবের মুখে। কী ভাবে খুঁজে পেলেন মোবাইলটা? জীবনকৃষ্ণের দ্বিতীয় মোবাইল উদ্ধারের নায়ক সেই সঞ্জীবের উত্তর, ‘‘পিছনে দেখি একটা খেজুর গাছ। তার পাশে খানিকটা ঝোপ। দু’পাশে পাঁক জড়ো করে রাখা। আমার মনে হল, ওখানে তো কেউ দেখছে না। এক বার হাত বাড়িয়ে দেখলে কেমন হয়? যখনই বুদ্ধিটা মাথায় এল তখনই আমি পাঁকের মধ্যে হাতড়ালাম। সেই সময় হাতে বাধল একটি প্লাস্টিকের প্যাকেট। সেই প্যাকেটটা খুলে দেখি ভিতরে রয়েছে একটি কালো রঙের মোবাইল ফোন। সেটা দেখে তখন সকলে হই হই করে উঠল। আমিও বুঝলাম আমার কাজ হয়ে গিয়েছে।’’

আপনার খুঁজে দেওয়া মোবাইল থেকে পাওয়া তথ্য যদি জীবনের বিপক্ষে যায় তা হলে আফসোস হবে? সঞ্জীবের সাফ উত্তর, ‘‘যে কাজে গিয়েছি তার সঙ্গে বেইমানি করতে পারব না।’’ বরং সঞ্জীব আরও বললেন, ‘‘জীবনদা’র সঙ্গে অনেক দিন ধরেই ভাল সম্পর্ক। তৃণমূলের সাধন’দা (সাধন প্রামাণিক) আমাদের নিয়ে গিয়েছিল কাজে। কেন খুঁজব না?’’ এর সঙ্গেই বাঁ হাতের ‘খেল’ দেখানো সঞ্জীবের সংযোজন, ‘‘সিবিআইয়ের কাজ তো আমি সহজ করে দিলাম। একটা পুরস্কার পাব না?’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement