চিন্তায় রয়েছেন রুকসানা ও তাঁর মেয়ে। নিজস্ব চিত্র
কাজের ফাঁকে ঘরের জানালা দিয়ে রাস্তার দিকে চলে যায় চোখ। ভাবেন, এই বুঝি ‘রুকসানা’ বলে ডাক দিলেন আশরাফ। আবার ফোনটা বেজে উঠলেই ছুটে যাচ্ছেন। এই বুঝি আশরাফের ফোন এল।
দু’সপ্তাহ হয়ে গেলেও কাশ্মীরে কর্মরত স্বামী আশরাফ জাঠের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না রুকসানা। আশরাফ কোথায় আছেন, কী করছেন, কী অবস্থায় রয়েছেন রোনও খবরই তিনি পাননি। আর তাতেই বাড়ছে উৎকণ্ঠা। শুধু তাই নয়, স্বামী টাকা না পাঠানোয় চার জনের সংসার চালানো দায় হয়েছে চাকদহের ওই মহিলার। মেয়েদের লেখাপড়া খরচ চালানো দুষ্কর হয়ে গিয়েছে। পাওনাদারেরা টাকা চাইছেন। কিন্তু সেই টাকা পরিশোধের কোনও সুযোগ তাঁদের নেই।
চাকদহের চান্দুরিয়া ১ পঞ্চায়েতের মধ্যচান্দুরিয়া গ্রামে ভাড়া ঘরে থাকেন রুকসানা। তিন মেয়ে এবং স্বামীকে নিয়ে তাঁর সংসার। গত ৪ অগস্টের পর থেকে তিনি স্বামীর কোনও খবর পাননি। ফলে, দুশ্চিন্তায় রয়েছে গোটা পরিবার।
রুকসানা জানান, কাশ্মীরের শ্রীনগর এসারগঞ্জ জানকাদালে আশরাফ জাঠের আদি বাড়ি। সেখানেই তাঁর বড় হওয়া। তিনি পেশায় একজন ঠিকাদার। সেখানে মাস আটেক ঠিকাদারির কাজ করেন। বাকি চার মাস চাকদহের শিমুরালিতে ঘর ভাড়া নিয়ে শীত পোশাকের ব্যবসা করেন। বছর সতেরো আগে আশরাফের সঙ্গে বিয়ে হয় রুকসানার। চোদ্দো বছর স্বামীর সঙ্গে কাশ্মীরেই ছিলেন তিনি। শারিরিক অসুস্থতার কারণে বছর তিনেক হল চাকদহের শিমুরালিতে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকছেন।
রুকসানা বলেন, “গত ৪ অগস্ট রবিবার রাতে শেষ স্বামীর সঙ্গে কথা হয়। পর দিন ৫ তারিখে টাকা পাঠাবে বলেছিল। লোকের কাছ থেকে ২৪ হাজার টাকা ধার করে মেয়েকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি করেছিলাম। সেই টাকা পরিশোধ করতে পারছি না।’’
আশরাফের মেয়ে সানিয়া বলে, ‘‘সবাই বলছে, এখন কাশ্মীরে কথা বলা যাচ্ছে। কিন্তু আমরা বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। ইদেও বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি।”