Nadia

পরীক্ষায় টুকলিরও দাবি! তাই নিয়ে রণক্ষেত্র নদিয়ার কলেজ, অন্তত সাত পড়ুয়া হাসপাতালে ভর্তি

শান্তিপুর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যাপক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য এ নিয়ে বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টি অধ্যক্ষা এবং গভর্নিং বডির সভাপতি তথা বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী এবং পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শান্তিপুর শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২৩ ২২:০৬
Share:

পরীক্ষায় নকল করতে দেওয়ার ‘দাবি’ নিয়ে মারামারি নদিয়ার শান্তিপুরে। —নিজস্ব চিত্র।

পরীক্ষায় টুকলির দাবি নিয়ে দুই কলেজের পড়ুয়াদের মধ্যে মারামারি। আর তাই নিয়ে কৃষ্ণনগর ডিএল রায় কলেজ এবং শান্তিপুর কলেজের বেশ কয়েক জন জখম হয়ে ভর্তি হলেন হাসপাতালে। মঙ্গলবারের ঘটনা।

Advertisement

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজগুলিতে স্নাতক স্তরের প্রথম সেমেস্টারের পরীক্ষা ছিল সোমবার। কৃষ্ণনগর ডিএল রায় কলেজের পরীক্ষার্থীদের আসন পড়েছে শান্তিপুর কলেজ। সোমবার ওই কলেজের কর্তৃপক্ষ এবং ছাত্র সংসদের সঙ্গে বচসায় জড়ান কয়েক জন। তার পর শুরু হয় হাতাহাতি। অন্য দিকে, শান্তিপুর কলেজের পরীক্ষার্থীদের আসন পড়েছে কৃষ্ণনগর সরকারি কলেজে। পরীক্ষা দিয়ে ফেরার পথে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে কয়েক জন পরীক্ষার্থীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে কৃষ্ণনগর ডিএল রায় কলেজের ছাত্র সংসদের সদস্যদের বিরুদ্ধে। ছাত্রদের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের মোট ৭ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে খবর। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার পরীক্ষা শুরুর আগে শান্তিপুর কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যে ডিএল রায় কলেজের ছাত্র সংসদের বেশ কয়েক জন পদাধিকারী জোর করে ঢোকার চেষ্টা করেন। কলেজের অধ্যাপক থেকে নিরাপত্তা কর্মীরা তাঁদের বাধা দিতে গেলে শুরু হয় বচসা। ওই গন্ডগোলে জড়িয়ে পড়ে শান্তিপুর কলেজের ছাত্র সংসদের সদস্যরা। শুরু হয় হাতাহাতি। বেশ কিছু পরীক্ষার্থীকে ব্যাপক মার ধর করা হয় বলে অভিযোগ। এর পর পরীক্ষা বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয় ডিএল রায় কলেজের ১,০৮০ পরীক্ষার্থী।

Advertisement

অবশ্য কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার পরে পরীক্ষা শেষ হয়। কিন্তু শান্তিপুর কলেজে ওই পড়ুয়াদের মারধরের খবর কৃষ্ণনগর গর্ভনমেন্ট কলেজে পৌঁছলে আবার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। ওই কলেজের বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে জাতীয় সড়কের উপরে বেধড়ক পেটানো হয় বলে অভিযোগ। মারধরের ঘটনায় অসুস্থ হয়ে পড়েন ৩ পরীক্ষার্থী। অন্য দিকে ডিএল রায় কলেজের ৪ ছাত্র জখম অবস্থায় শক্তিনগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

শান্তিপুর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যাপক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টি অধ্যক্ষা এবং গভর্নিং বডির সভাপতি তথা বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী এবং পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’’ শান্তিপুর কলেজের ছাত্রনেতা রুপম পাল জানান, কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। উভয় পক্ষকে বুঝিয়ে শান্ত করে পরীক্ষা নির্বিঘ্নে শেষ হয়েছে। অন্য দিকে, কলেজের নিরাপত্তা রক্ষী সন্দীপকুমার ঘোষের দাবি, ‘‘প্রত্যেক বছর কলেজ ইউনিয়নের দাদারা এসে অবাধে টুকলি করার দাবি করেন। বাধা দিতে গেলে আমাদের মারধরের হুমকি দেন। এ ভাবে চলতে থাকলে শিক্ষা ব্যবস্থাই লাটে উঠবে।’’

এ নিয়ে কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি সম্রাট পালের প্রতিক্রিয়া, ‘‘যে ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখের এবং লজ্জার। শিক্ষাক্ষেত্রে এই রকম ঘটনা কখনওই কাঙ্খিত নয়। তবে এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement