— প্রতীকী চিত্র।
রাজনৈতিক কর্মসূচির জেরে অবরুদ্ধ ছিল জাতীয় সড়ক। গাড়ির লাইনে দাঁড়িয়ে অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যেই মৃত্যু হল এক অন্তঃসত্ত্বার। পরিবারের অভিযোগ, অবরোধের জেরে ওই অন্তঃসত্ত্বাকে সময় মতো হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেনি তারা। বিনা চিকিৎসাতেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। শুক্রবার নদিয়ার রানাঘাটে ১২ নম্বর জাতীয় সড়কে এই ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক শোরগোল। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপির ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মসূচি’ এক জনকে এ ভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে পদ্মশিবির।
স্থানীয় সূত্রের খবর, শুক্রবার নদিয়ায় রানাঘাটে ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের বিভিন্ন জায়গায় চলছিল বিজেপির ‘চাক্কা জ্যাম’ কর্মসূচি। সড়ক অবরোধ ছিল। সেই সময় অ্যাম্বুল্যান্সে করে দুর্গা শীল নামে ২৩ বছরের এক অন্তঃসত্ত্বাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন পরিবারের সদস্যেরা। ফুলিয়ার প্রফুল্লনগর এলাকার বাসিন্দা দুর্গা চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। শুক্রবার কাজ করতে গিয়ে পড়ে গিয়ে জখম হন তিনি। প্রথমে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ফুলিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। কিন্তু শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে দুর্গাকে রানাঘাট সদর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। রাস্তায় অবরোধের মাঝে পড়ে চিকিৎসা পেতে দেরি হয় তাঁর। পরিবারের দাবি, ঠিক সময়ে হাসপাতালে ভর্তি করাতে পারলে হয়তো প্রাণে বাঁচানো যেত ওই যুবতীকে। মৃতার স্বামী হীরা শীল অভিযোগ করেন অবরোধের জেরে যানজট হয়। তার ফলেই প্রাণ গিয়েছে অসুস্থ স্ত্রীর।
শনিবার বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক শোরগোল। রানাঘাট জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মসূচির জেরে মানুষের মৃত্যু হলে তার দায় সেই রাজনৈতিক দলের উপরেই বর্তায়। অ্যাম্বুল্যান্সে আটকে পড়েছিলেন তিনি। পরিবারের লোক বিজেপি নেতৃত্বকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা কোনও রকম সহযোগিতা করেননি। এই ঘটনা মর্মান্তিক। এই ঘটনা ন্যক্কারজনক। নিন্দা জানানোর কোনও ভাষা নেই।’’ অন্য দিকে, নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘কস্মিনকালেও আমাদের কোনও কর্মসূচিতে অ্যাম্বুল্যান্সে আটকানো হয়নি। চালকের অদক্ষতায় বিক্ষোভস্থলের অনেক আগেই আটকে পড়ে গাড়িটি। বিষয়টি আমাদের নজরে আসতেই আমরা দ্রুত পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তবে এর সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। গোটা ঘটনায় আমরা মর্মাহত।’’