স্ত্রীকে বাঁশপেটা করে খুনের অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে। প্রতীকী চিত্র।
স্বপ্নাদেশ পেয়ে ঘুমের ঘোরে স্ত্রীকে খুন করে ফেলেছেন। পুলিশের কাছে এমনই দাবি এক যুবকের। শেষমেশ সামনে এল প্রকৃত তথ্য। স্বামীকে গ্রেফতার করেছে মুর্শিদাবাদের কান্দি থানার পুলিশ।
বৃহস্পতিবার মাঝরাত। এক বধূর আর্ত চিৎকারে তাঁর বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন প্রতিবেশীরা। ঘরে ঢুকে আঁতকে ওঠেন তাঁরা। দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরের মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে আছেন যুবতী। প্রতিবেশীরা তাঁকে উদ্ধার করে গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত ওই বধূর নাম নন্দিতা মাড্ডি (২৯)। ঘটনার অব্যবহিত পরেই তদন্ত শুরু করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মৃতার স্বামী বর্ণবাস সোরেনকে। পুলিশের সামনে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন বর্ণবাস জানান, তিনি নাকি স্বপ্নাদেশ পেয়ে স্ত্রীকে খুন করেছেন! এমনকি, ঘুমের ঘোরেই স্ত্রীকে হত্যা করেছেন।
যদিও মৃতার দিদির অভিযোগ ভিন্ন। তাঁর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে স্বামীকে গ্রেফতার করে আবার এক দফা জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। তখন বর্ণবাস জানান, তিনি ভিন্ রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। বছর দশেক আগে নন্দিতার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের তিন সন্তানও রয়েছে। বছরে এক দু’বার বাড়ি আসতেন তিনি। এই ভাবে কিছু দিন আগে ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরে উঠেছিলেন শ্বশুরবাড়িতে। সেখানে স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য হয়। ওই দিন মাঝরাতে স্ত্রীর মোবাইলে একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে। আর তাতেই রাগ হয় তাঁর। অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে, এই সন্দেহের বশে স্ত্রীকে বাঁশ দিয়ে এলোপাথাড়ি পেটাতে শুরু করেন তিনি। এর পরই মৃত্যু হয় স্ত্রীর।
খুনি স্বামীর এই আচরণে হতবাক পুলিশও। এই প্রসঙ্গে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের মনোরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এই ধরনের অপরাধীদের অপরাধকে আড়াল করার জন্য মিথ্যে গল্প উপস্থাপনের এক অদ্ভুত প্রবণতা লক্ষ করা যায়। এমন একটা সময় আসে, যখন অপরাধী নিজের বানানো গল্পকে সত্যি বলে বিশ্বাস করতে শুরু করে।’’