ভাঙনে তলিয়ে গেছে জমি। —নিজস্ব চিত্র।
শমসেরগঞ্জ ব্লকের নিমতিতা পঞ্চায়েতের একটি জনপদ ধানঘড়া। গ্রামের মানুষের প্রধান পেশা কৃষিকাজ। গ্রামটি একটি ছেঁড়া কাগজের মতো। গঙ্গা ভাঙনে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে গ্রামটি। পাঁচ বছর আগেও এই গ্রামে প্রায় ছয় হাজার মানুষের বসবাস ছিল।
এক সময় সবুজে ঘেরা ছিল এই ধানঘড়া। ছিল আম, জাম, লিচুর বাগান। সারা বছর নানা ধরনের আনাজের চাষ ছিল গ্রামের জমিগুলিতে। গ্রামের মানুষের কাছ থেকে জানা গেল, ধানঘড়ার মানুষ অত্যন্ত পরিশ্রমী। এক সময় ভোরের আজানের পর, জমিতে গিয়ে ফসলের পরিচর্যা করতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতেন তাঁরা। ফিরে আসতেন দুপুরে। এখানকার ফসল জেলা ছাড়িয়ে ভিন্ রাজ্যেও চলে যেত এক সময়। গ্রামের মধ্যে ছিল তিনটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। শিক্ষার হার ছিল ৮০ শতাংশ।
গঙ্গা ভাঙনের কারণে গ্রামটির বেশির ভাগ অংশ চলে গিয়েছে জলের তলায়। কৃষকরা পরিনত হয়েছে দিনমজুরে। গ্রামের বিদ্যালয়টি পর্যন্ত গঙ্গাগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে গ্রামে একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। গ্রামের অনেক বাড়ির আবস্থা ভগ্নপ্রায়। প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকার কারণে, স্কুলছুট শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। গঙ্গা ভাঙন রোধের কাজ শুরু হয়েছে। গ্রামের মানুষের আশা, এ বার হয়তো পাকাপাকি ভাবে ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে। অন্যথায় সমগ্র গ্রামটি তলিয়ে যাবে গঙ্গাগর্ভে। অবশিষ্ট গ্রামটিকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন গ্রামবাসীরা।