পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল। কিন্তু সেখানে কার কথা বেশি চলবে সেই নিয়ে ফের দুই নেতা-নেত্রীর অনুগামীদের বিরোধী সামনে চলে এসেছে। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার নেতা-কর্মীদের বিরোধ মুছে কাজ করার আহ্বান জানালেও তা যে তাঁরা কানে তুলছেন না, তা শুক্রবার দেখল মানিকবাজার গ্রাম পঞ্চায়েত।
শুক্রবার ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ না পাওয়ার অভিযোগ তুলে দলের পতাকা নিয়ে ওই পঞ্চায়েতে বিক্ষোভ দেখালেন প্রাক্তন বিধায়ক দীপালি সাহার অনুগামীরা। মূলত ওই এলাকার মানিকবাজার, কাষ্ঠসাঙ্গা, নারায়ণসুন্দরী গ্রাম থেকে আসা বিক্ষোভকারীদের দাবি, ‘‘তিন বছর হতে চলল আমরা কাজ পাচ্ছি না। কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান পক্ষপাতিত্ব করছেন।’’ এর প্রতিবাদে এ দিন দুপুর সাড়ে ১১টা থেকে প্রায় দুপুর ২টো পর্যন্ত পঞ্চায়েতের ভিতরে থাকা কর্মীদের তালা দিয়ে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। খবর পেয়ে আসে পুলিশ। তারপরেও তালা না খোলায় সোনামুখী থেকে আসতে হয় বিডিও রিজওয়ান আহমেদকে। তিনি এ বিষয়ে প্রধানের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দিলে তারপরে বিক্ষোভ ওঠে।
বস্তুত সাত আসনের সোনামুখী মানিকবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতে ক্ষমতা ধরে রাখা নিয়ে সোনামুখীর পুরপ্রধান সুরজিৎ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রাক্তন তৃণমুল বিধায়ক দীপালিদেবীর গোষ্ঠীর লড়াই দীর্ঘদিনের। দল সূত্রে খবর, এই সাতটির মধ্যে চারটি আসন নিয়ে ওই পঞ্চায়েতে ক্ষমতাসীন সুরজিৎবাবুর অনুগামী বলে পরিচিত তৃণমুল প্রধান কদম লোহার।
বিক্ষোভকারীদের পক্ষে দীপালিদেবীর অনুগামী বলে পরিচিত স্থানীয় তৃণমূল নেতা অরিজিৎ মল্লিকের দাবি, ‘‘তিন বছর হতে চলল আমাদের এলাকার নারায়ণ সুন্দরী, মানিকবাজার ও কাষ্ঠসাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দারা ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ চেয়েও পাননি। পক্ষপাতিত্ব করছেন প্রধান। তার বিরুদ্ধেই এই আন্দোলন।’’ অন্যদিকে ওই এলাকায় সুরজিৎবাবুর অনুগামী হিসেবে পরিচিত দলেরই সোনামুখী পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বামাচরণ গড়াই অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করছেন, ‘‘কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ মিথ্যা। দলকে বিড়ম্বনার মধ্যে ফেলার চেষ্টা চলছে।’’ ওই পঞ্চায়েতের প্রধান কদম লোহারও দাবি করেছেন, ‘‘মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমাকে সরানোর চেষ্টা চলছে। অফিসে বিক্ষোভ দেখে আমাকে এ দিন বাড়ি ফিরে যেতে হয়। আমি নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি।’’ সোনামুখীর বিডিও-ও দাবি করেছেন, ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ না পাওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়।
ওই দুই নেতা-নেত্রীর অনুগামীদের বিরোধ সোনামুখী শহর তো বটেই, এই ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েতের কাজেও তার প্রভাব ফেলছে। কিন্তু দলের শীর্ষ নেতৃত্বের হুঁশিয়ারী সত্ত্বেও কেন দু’পক্ষের অনুগামীরা দমছেন না? প্রশ্ন তুলেছেন জেলার অন্যান্য তৃণমূল কর্মীরা। তাঁদের মতে, দলের একাংশের বিরোধিতায় দলেরই ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। কতদিন এ সব চলবে?
এ দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে, সুরজিৎবাবু বলেন, ‘‘ওটা গ্রামীণ এলাকার সমস্যা। বিষয়টি স্থানীয় নেতৃত্ব দেখছেন।’’ অন্যদিকে ফোনে চেষ্টা করেও দীপালিদেবীকে পাওয়া যায়নি।
সাঁতারে যোগ। জাতীয় স্তরের সাঁতার প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে যাচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ৬ জন। সকলেই মেদিনীপুর সুইমিং ক্লাবের ছাত্রছাত্রী। শুক্রবার এ কথা জানান সুইমিং ক্লাবের সম্পাদক তপনকুমার সাহা। গত ২ থেকে ৫ জুন রিষড়ায় অনুষ্ঠিত হয় রাজ্য বয়স ভিত্তিক সাঁতার প্রতিযোগিতা। সাঁতারে সফল হয় মেদিনীপুরের প্রাঞ্জল পাত্র এবং সৃজিতা ঘোষ। ডাইভিং-এ সফল হয় চন্দন বেরা, ঋত্বিক দাস, নীলেশ গায়েন এবং দিগ্বিজয় পণ্ডিত।