বিজেপি প্রার্থীর প্রচারে মুকুল রায়। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
প্রথমে দিলীপ ঘোষ, তার পরেই মুকুল রায়। একের পর এক দলের প্রথম সারির নেতাদের করিমপুর উপনির্বাচনের প্রচারে হাজির করছে বিজেপি। শুধু উপস্থিত থাকা নয়, ভোটের আগে তিন-চার দিন এলাকায় মাটি কামড়ে পড়ে থাকবেন বলেও জানিয়েছেন মুকুল রায়।
দলীয় সূত্রের খবর, স্থানীয় নেতা-কর্মীদের জানপ্রাণ লড়িয়ে প্রচারে ঝাঁপানোর বার্তা দেওয়া হয়েছে উপরমহল থেকে। কারণ রাজনৈতিক মহলের মতে, করিমপুর বিজেপি-র কাছে মাধ্যমিকের আগে টেস্ট পরীক্ষার মতো। অর্থাৎ, বিধানসভার প্রধান পরীক্ষায় নামার আগে প্রস্তুতি কেমন হয়েছে তা দেখে নেওয়ার ক্ষেত্র। পাশাপাশি, শাসক দলের প্রধান বা একমাত্র বিকল্প হিসাবে বিজেপির গ্রহণযোগ্যতা ঠিক কতটা সেটাও এই উপ-নির্বাচনে মেপে নিতে চাইছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই প্রচারে সর্বশক্তি দিয়ে নামা হচ্ছে। কোনও খুঁত বা খামতি যাতে না থাকে সেটাও নিশ্চিত করা হচ্ছে। মুকুল রায় অবশ্য বলেছেন, ‘‘সেমিফাইনাল, ফাইনাল বলে কিছু নেই। যা হবে সব একুশের বিধানসভায় হবে। তার আগে এই উপনির্বাচন রাজ্যবাসীর কাছে একটা বার্তা দেওয়া যে, বিজেপির বিকল্প কিছু নেই। বিজেপি-ই একমাত্র উন্নয়নের পথ।’’
করিমপুর উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদারের সমর্থনে প্রচারের জন্য বুধবার সকালে মুকুল রায় পৌঁছে যান। বেলা এগারোটা নাগাদ নাটনা মোড় থেকে হুডখোলা জিপে প্রার্থীকে পাশে নিয়ে শুরু হয় রোড শো। প্রথমে করিমপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার নাটনা, পাট্টাবুকা, আনন্দপল্লি হয়ে করিমপুর বাজার ও পরে করিমপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন জায়গায় তাঁরা ঘোরেন। এর আগে গত সোমবার প্রচারে এসে শিকারপুর, যমশেরপুর ও করিমপুরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরেছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
সর্বশক্তি দিয়ে বিজেপির এই প্রচারে নামার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এ দিন মুকুল বলেন, ‘‘যখন তৃণমূল করতাম তখন এই এলাকার মানুষের সঙ্গে আমার আত্মিক যোগাযোগ ছিল। নদিয়া জেলায় বিজেপির রাজনৈতিক উত্থান ঘটানো আমার কাছে চ্যালেঞ্জ। এখানে থেকে জয়ের পথ সুনিশ্চিত করাই আমার একমাত্র লক্ষ্য।” এই কেন্দ্রে লোকসভা ভোটে বিজেপি কয়েক হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিল। সেই প্রসঙ্গ উঠতে মুকুল বলেন, “করিমপুরের রাস্তায় মানুষের মধ্যে যে উৎসাহ আমার চোখে পড়েছে তাতে সামান্য ১৪ হাজার ভোট অতিক্রম করে আমাদের প্রার্থীকে জেতানো কিছুই নয়।’’ লোকসভা ভোটে তৃণমূলের থেকে একটি আসন ছিনিয়ে নিয়ে নদিয়ায় নিজেদের শক্তি বিস্তার করেছিল বিজেপি। বিধানসভা পর্যন্ত তাতে আঁচ আসতে দিতে রাজি নয় তারা। ফলে করিমপুর উপ-নির্বাচন জেতা তাদের কাছে অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ, মনে করছে রাজনৈতিক মহল।