কাল, সোমবার জেলায় আসছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হেলিকপ্টারের মহড়া হবিবপুরে ছাতিমতলা মাঠে। শনিবার। ছবি: প্রণব দেবনাথ।
নাগরিকত্বের প্রশ্নে বিজেপির প্রতিশ্রুতির উপরে ভরসা না রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন কুপার্স ক্যাম্প এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই। সেই মতো আটঘাঁট বাঁধছএ তৃণমূলও।
রানাঘাট শহর লাগোয়া উদ্বাস্তু শহর কুপার্স ক্যাম্প নোটিফায়েডের ১২টি ওয়ার্ডের সব ক’টিতে তৃণমূলের পক্ষ থেকে পথসভা করা হয়েছে। সব ক’টি ওয়ার্ড থেকে কর্মীদের সভায় যাওয়ার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। একটি বাসে কাউন্সিলর, ওয়ার্ড সভাপতি ও প্রাক্তন তিন কাউন্সিলার সভাস্থলে যাবেন।
গত ২৬ নভেম্বর উদ্বাস্তু শহরে এসে নাগরিকত্বের তাস খেলেছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কুপার্স বাজার লাগোয়া মাঠে সভায় তিনি বলেন, “বিজেপি ক্ষমতায় এলে এখানকার সব উদ্বাস্তুকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। আমাদের উপর ভরসা রাখুন।” তা শুনে সভায় উপস্থিত অনেকেই হাততালি দিয়েছেন। কিন্তু ভরসা যে সকলে রাখতে পারছেন না, তা কার্যত পরিষ্কার।
গত লোকসভা নির্বাচনে কুপার্সের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে বিজেপির চেয়ে পিছিয়ে পড়েছিল তৃণমূল। সব মিলিয়ে এক হাজারেরও বেশি ভোটে পিছিয়ে ছিল শাসক দল। এর উপর রয়েছে নাগরিকত্বের প্রসঙ্গ। বিজেপির সভার পর কুপার্সবাসী অনেকেই ভেবেছিলেন, তৃণমূলের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যাবে। এখানকার মানুষের নাগরিকত্বের মতো স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। তাঁদের দুশ্চিন্তামুক্ত হওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বিজেপি নেতা। কিন্তু এর পরেও শহরের মানুষের তৃণমূল নেত্রীর সভায় যাওয়ার উৎসাহ অন্য কথা বলছে।
কুপার্স শহর তৃণমূলের সভাপতি তথা কুপার্স নোটিফায়েডের ভাইস চেয়ারম্যান দিলীপ দাসের দাবি, “বিজেপির কোন নেতা কী বলে গেলেন, আর তাতে শহরের সব মানুষ তাদের উপর ভরসা রাখতে শুরু করলেন, এটা ভাবার কোনও কারণ নেই। কুপার্সের মানুষ আমাদের সঙ্গেই আছেন। লোকসভা নির্বাচনে কেউ কেউ ভুল করে বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন। সেটা আর হবে না।”
কুপার্স শহর বিজেপি সভাপতি দীপক দে পাল্টা বলেন, “সে দিন ঠিক কথাই বলেছিলেন আমাদের নেতা দিলীপ ঘোষ। আমরা যে কথা দিই, সেটা রাখি। মানুষ সেটা জানে।” তাঁর অভিযোগ, “কাউকে টাকা দিয়ে, কাউকে ভয় দেখিয়ে, বিভিন্ন ভাবে শহরের মানুষকে ওই সভায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অনেকে বিভিন্ন সরকারি সুযোগ সুবিধা পান, সেটা বন্ধ হয়ে যেতে পারে, এই ভয়ে সভায় যাচ্ছেন। অনেককে আবার বিভিন্ন সুযোগ করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।”
তৃণমূলের দিলীপ দাস বলেন, “স্বতঃস্ফুর্ত ভাবেই কুপার্সের মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় যাছেন। কোনও ভয় বা প্রলোভনে নয়।” আর দীপকের বক্তব্য, “শহরের মানুষ কাদের সঙ্গে আছেন, নির্বাচনেই সেটা প্রমাণ হয়ে যাবে।”