গরু পাঁচারে নজরদারী বিএসএফের। —ফাইল চিত্র।
গঙ্গা–পদ্মায় জল বাড়তেই মুর্শিদাবাদে গরু পাচার চক্র সক্রিয় হয়েছে বলে সূত্রের খবর। গরু পাচারে তৎপরতা বেড়েছে লাগোয়া মালদহতেও। গত দু’দিনে পর পর গরু পাচারকারীদের রুখতে গুলিও চালাতে বাধ্য হয়েছেন বিএসএফ জওয়ানরা।
বহরমপুরের ৮৪ নম্বর ব্যাটালিয়ানের বর্ডার আউট পোস্টে বৃহস্পতিবার এই ধরনের হামলা রুখতে বিএসএফ জওয়ানেরা বাংলাদেশি চোরাকারবারিদের উপরে গুলি ও গ্রেনেড ছুড়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছে। বিএসএফ জানায়, মুর্শিদাবাদ ও মালদহ সহ দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তে প্রায় প্রতিদিন ৩ থেকে ৪টি এই ধরনের হামলার ঘটনা ঘটেছে, যাতে একাধিক বিএসএফ জওয়ান গুরুতর আহত হয়েছেন।
এই ঘটনার পর, বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর সাথে বিএসএফের একটি বৈঠকও হয়, যেখানে বাংলাদেশি চোরাকারবারিদের মারাত্মক হামলার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ নথিভুক্ত করা হয়েছে বলে জানায় বিএসএফ। হামলা ও আত্মরক্ষার্থে গুলি চালানোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় একটি প্রাথমিক অভিযোগও নথিভুক্ত করা হয়েছে।
বিএসএফের জনসংযোগ আধিকারিক এ.কে. আর্য বলেন, ‘‘দুর্ভাগ্যবশত এই ধরনের ঘটনা আমাদের ডিউটি লাইনে অস্বাভাবিক নয়। বিএসএফ জওয়ানরা ব্যতিক্রমী সাহস ও সতর্কতার সঙ্গে তাঁদের দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁদের সতর্ক করার জন্য বিজিবি-র সঙ্গে ঘন ঘন পতাকা বৈঠক হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশি অপরাধীদের দ্বারা আক্রমণ এবং অবৈধ অনুপ্রবেশ ঘটছে। তাদের এই নিষ্ক্রিয়তা চোরাকারবারি এবং অপরাধীদের উৎসাহিত করছে।’’
বুধবার রাতে, জঙ্গিপুর লাগোয়া মালদহের অন্তর্গত বর্ডার আউটপোস্ট জগজীবনপুরে ১০-১৫ জন দুষ্কৃতীকে ধারালো অস্ত্র ও তলোয়ার নিয়ে বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত লাইনের কাছে ভারতীয় সীমান্তে প্রবেশ করতে দেখে বিএসএফ। জওয়ানেরা তাদের থামাতে চ্যালেঞ্জ জানান। কিন্তু বাংলাদেশি দুর্বৃত্তরা সেই চ্যালেঞ্জ উপেক্ষা করে জওয়ানদের চোখে টর্চের উজ্জ্বল আলো জ্বালিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করে বলে সূত্রের খবর। বিএসএফের দাবি, কোনও উপায় না থাকায় আত্মরক্ষার্থে বিএসএফ জওয়ান চোরাকারবারিদের লক্ষ্য করে গুলি চালান। গুলির শব্দ শুনে বাংলাদেশি চোরাকারবারীরা ঘন ফসল ও অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশের দিকে ফিরে যায়। পরে ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে একটি ধারালো অস্ত্র এবং মশাল উদ্ধার করা হয়। গুলিতে কোনও চোরাকারবারীর আহত হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না বিএসএফ।
একই ভাবে বিএসএফের উপর হামলা হয় বৃহস্পতিবার রাতেও। ৪টি গরু সহ জনা চারেক দুষ্কৃতীকে বাধা দিলে তারা পাল্টা আক্রমণ করে। জওয়ানরা চোরাকারবারিদের দিকে এক রাউন্ড গুলি চালান।