কান্নায় ভেঙে পড়েছেন রিম্পার মা। ডোমকলে শনিবার। ছবি: সুজাউদ্দিন।
চুরির অপবাদে রাস্তার মধ্যেই প্রায় নগ্ন করে দেহ তল্লাশি করা হয়েছিল কলেজ পড়ুয়া মেয়েটির। রিম্পা ঘোষ (১৮) নামে ওই ছাত্রীর পরিবারের দাবি, তার জেরেই শনিবার গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি।
দিন কয়েকের ছুটি কাটিয়ে মাসির বাড়ি থেকে বাড়ির বাস ধরেছিল তরুণী। কিন্তু বেড়াতে আসা মেয়েটি মাসির বাড়ি ছাড়তেই নজরে পড়েছিল, সোনার হার দু’টি উধাও। টেবিলের উপর রাখা নগদ ২৭০ টাকারও খোঁজ নেই। সন্দেহের তির যায় রিম্পার দিকেই। দেরি করেননি মাসি সাগরী ঘোষ। স্বামীর মোটরবাইকে ধাওয়া করেছিলেন। রাস্তায় বাস থামিয়ে প্রায় বিবস্ত্র করে রিম্পাকে তল্লাশি চালিয়েও ক্ষান্ত হননি তিনি, স্থানীয় এক আত্মীয়ার বাড়িতে তুলে নিয়ে তাঁকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। তবে ঘণ্টা কয়েক ধরে ওই দেহ-তল্লাশি কিংবা মারধরের পরেও সোনার চেনের হদিস মেলেনি। এ দিকে জেরা আর তল্লাশির জেরে অপমান ও লজ্জায় অচেতন হয়ে পড়ে মেয়েটি। সন্ধ্যায় সে অসুস্থ হয়ে পড়লে, গাড়ি ভাড়া করে তাঁকে পাঠানো হয় মুর্শিদাবাদের ডোমকলের কুমোরপুরের বাড়িতে।
রিম্পা ঘোষ
রিম্পার বাড়ির লোকের অভিযোগ, ‘‘অপমানের বহরটা বেশি হয়ে গিয়েছিল। তার উপর রিম্পা বাড়ি ফেরার পরেও ফোনে তাকে শাসানো চলছিল।’’ শনিবার তার জেরেই রিম্পা আত্মহত্যা করেন। পুলিশ তাঁর মাসি-সহ পাঁচ জনকে খুঁজছে।
পুলিশ জানায়, দিন কয়েক আগে ডোমকল গার্লস কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী রিম্পা জলঙ্গিতে মাসির বাড়ি যান। মঙ্গলবার সেখান থেকে তিনি ফিরছিলেন। রিম্পা বাড়ি থেকে বেরোনোর পর খোঁজ পড়েছিল গয়নার। সাগরী বলছেন, ‘‘প্রায় ভরি খানেক সোনার গয়না কষ্ট করে তৈরি করিয়েছিলাম। তা চুরি গেলে কার মাথার ঠিক থাকে বলুন!’’
রিম্পার বাবা অমরবাবু বলেন, ‘‘মেয়েটার বড় আত্মসম্মান বোধ ছিল, বলত, ‘কন্যাশ্রীর টাকায় পড়ে চাকরি করব।’ কিন্তু ওরা মেয়েটাকে বাঁচতে দিল না গো!’’