রেজিনগর স্টেশন। —ফাইল চিত্র।
দীর্ঘ এক যুগ পরে গত বছর আশার আলো দেখেছিল রেজিনগর শিল্পতালুক। সে বার বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে ‘কৌশিস ই মোবিলিটি প্রাইভেট লিমিটেডে’ নামে একটি সংস্থা রেজিনগর শিল্পতালুকে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ‘ই-বাস’ কারখানা করবে বলে রাজ্যের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। আরও একটি বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন দোরগোড়ায়, কিন্তু বেশ কয়েক বার ওই সংস্থার লোকজন রেজিনগরে জমি দেখে গেলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। শিল্পহীন জেলার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। জেলার ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সুযোগ পেলে এবারের বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে সে সব কথা তুলবেন।
মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘গত বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে রেজিনগর শিল্প তালুকে ই-বাস কারখানার জন্য একটি সংস্থার সঙ্গে রাজ্য সরকারের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। কিন্তু আরও একটি শিল্প সম্মেলন চলে এলেও সেই কারখানা তৈরি হয়নি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘মুর্শিদাবাদ একপ্রকার শিল্পবিহীন জেলা। আমরা চাই মুর্শিদাবাদে ভারী শিল্প করা হোক, যাতে জেলার মানুষ সেখানে কাজ পান।’’
তবে মুর্শিদাবাদ জেলা শিল্প কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার আহমোদুল্লা তালিব বলেন, ‘‘আগামী ২১-২২ নভেম্বর কলকাতায় বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন হবে। দু’দিনে দু’টি সেশনে আমাদের জেলার বিভিন্ন বিভাগের ৩০ জন উদ্যোগী-ব্যবসায়ী তাতে উপস্থিত থাকবেন। আগামী শনিবার জেলা শিল্প কেন্দ্রের তরফে সে জন্য প্রস্তুতি বৈঠকও ডাকা হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমি সবে দায়িত্ব নিয়েছি। রেজিনগর শিল্পতালুকে ই-বাস কারখানার কী অবস্থা তা আমার জানা নেই।’’
মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে ২০০৮ সালে তৎকালীন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য রেজিনগরে ১৮৭ একর জমির উপরে শিল্পতালুকের শিলান্যাস করেন। এই শিল্পতালুকের দায়িত্ব দেওয়া হয় রাজ্যের সংস্থা ওয়েস্ট বেঙ্গল স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভলপ্টমেন্ট কর্পোরেশনকে। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া, রেজিনগর স্টেশনের অনতিদূরে এই শিল্পতালুক গড়ে উঠেছে। রেজিনগর স্টেশনের কাছাকাছি ছাড়াও ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে হওয়ায় এই শিল্পতালুকের যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব ভাল।
এ ছাড়া জল, বিদ্যুতের ব্যবস্থা ভাল থাকলেও হাতে গোনা দু’একজন ছাড়া উদ্যোগীরা রেজিনগর শিল্পতালুকমুখী হননি। যার জেরে একপ্রকার খাঁ খাঁ করছে এই শিল্পতালুক।বাসিন্দারা জানাচ্ছেন আশা-আশাই থেকে গিয়েছে।