কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়।
মাসখানেক পরে ফের নিজের পদে ফিরলেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবাংশু রায়। উচ্চ শিক্ষা দফতরের হস্তক্ষেপে এক মাস ধরে চলা অচলাবস্থা কাটল। উপাচার্য শঙ্করকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘সরকারের নির্দেশে এ দিন দেবাংশুবাবু রেজিস্ট্রার পদে যোগ দিয়েছেন। আমি সরকারি সিদ্ধান্তে সম্মতি জানিয়েছি। সকলকে নিয়েই এই বিশ্ববিদ্যালয় আগামী দিনে এগিয়ে যাবে।’’
গত ১৭ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আচমকা এক নির্দেশে বিশেষ ছুটিতে পাঠিয়েছিলেন রেজিস্ট্রারকে। কাজ চালানোর জন্য তড়িঘড়ি বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষক সুভাষ সরকারকে কার্যকরী রেজিস্ট্রারের পদ দেওয়া হয়। এ নিয়ে মাসখানেক বিস্তর জলঘোলা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। দেবাংশু রায়ের পক্ষ নিয়ে আধিকারিকদের বেশির ভাগই কর্মবিরতি শুরু করেন। এরই মধ্যে সহ-উপাচার্য গৌতম পাল তাঁকে রেজিস্ট্রার পদে পুনর্বহাল করেন। এর পরে দেবাংশু ও সুভাষ দু’জনেই সমান্তরাল ভাবে রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু কয়েক দিন আগেই উপাচার্য একটি নির্দেশিকা জারি করে জানান, সুভাষ সরকারই রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব সামলাবেন। এর পরে দেবাংশু কয়েক দিনের জন্য রেজিস্ট্রারের ঘরে বসা বন্ধ করে দেন।
কিন্তু দিন তিনেক আগে উচ্চশিক্ষা দফতর চিঠি দিয়ে জানায়, দেবাংশু রায়কে রেজিস্ট্রারের পদ ফিরিয়ে দিতে হবে। তাঁকে বিশেষ ছুটিতে পাঠানো নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। শুক্রবার ওই চিঠি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পরে সব পক্ষই নড়েচড়ে বসে। উপাচার্য-ঘনিষ্ঠ অনেকেই রাজ্য সরকারের এক্তিয়ার নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। অনেকেই দাবি করেন, উপাচার্য আইন মেনেই দেবাংশুকে সরিয়েছিলেন। উচ্চশিক্ষা দফতর স্বশাসিত সংস্থা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাজে হস্তক্ষেপ করছে।
তবে সোমবার সব জল্পনারই অবসান ঘটল। এ দিন দেবাংশু বলেন, ‘‘উচ্চশিক্ষা দফতরের নির্দেশে ও উপাচার্যের সম্মতিতে আমি রেজিস্ট্রার পদে পুনরায় যোগ দিয়ে কাজ শুরু করেছি।’’ তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা গোড়া থেকেই তাঁর পাশে ছিল। সংগঠনের কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের যুগ্ম আহ্বায়ক নন্দকুমার ঘোষের দাবি, ‘‘আইন মেনে সহ-উপাচার্য তো আগেই দেবাংশু রায়কে রেজিস্ট্রারের পদে ফিরিয়ে এনেছিলেন। পরে উপাচার্য সেই নির্দেশ খারিজ করে দেন। এখন দেখা যাচ্ছে, উপাচার্য দেরিতে হলেও সহ-উপাচার্যের পথেই হাঁটলেন!’’