Nadia

বিজেপি ঘরে পার্থসারথী, দলে স্বস্তি কি?

শনিবার দুপুরেই রানাঘাটের বাড়ি থেকে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন পার্থসারথী।

Advertisement

সম্রাট চন্দ

রানাঘাট শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২১ ০৯:২০
Share:

প্রতীকী ছবি।

শান্তিপুরের বিধায়কের পর রানাঘাটের প্রাক্তন পুরপ্রধান। তৃণমূল ছেড়ে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলে নাম লেখানোর পালা চলছেই।
ইতিমধ্যেই তাঁকে দলের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তার পর রানাঘাটের পুর প্রশাসকের পদ ছেড়ে দেন তিনি। শনিবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেছেন প্রাক্তন বিধায়ক তথা প্রাক্তন পুরপ্রধান পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়। আজ, রবিবার তাঁর আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কথা। কিন্তু এতে বিজেপির স্থানীয় নেতাদের কত জন স্বস্তিতে, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। কারণ পার্থসারথী যোগ দেওয়ায় আগামী বিধানসভা ও পুরসভা ভোটে বিজেপির টিকিটের দাবিদার বাড়ল।
শনিবার দুপুরেই রানাঘাটের বাড়ি থেকে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন পার্থসারথী। তৃণমূলত্যাগী বিধায়ক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবীর ঘোষাল, বৈশালী ডালমিয়াদের সঙ্গে চার্টার্ড বিমানে তিনিও দিল্লির পথ ধরেন। পার্থ বলেন, “আমাকে অপসারণের যে চিঠি পাঠানো হয়েছে, তার ভাষা অত্যন্ত অপমানজনক। সেখানে কার্যত দল থেকেই আমায় সরানো হয়েছে। আমি ইস্তফা দেওয়ার পরেও দু’দিন অপেক্ষা করেছি। কিন্তু এর মধ্যে শুধু কিছু স্থানীয় নেতা আমার নামে কুকথা বলে গিয়েছেন। তাই বিজেপিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।” তৃণমূলে কাজের পরিবেশ নেই বলেও তিনি দাবি করেন।
টানা ২৫ বছর রানাঘাটে পুরপ্রধান পদে ছিলেন পার্থসারথী। প্রথম ১৫ বছর কংগ্রেসের হয়ে, পরের ১০ বছর তৃণমূলের। পুরসভার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ায় শেষ মাস ছয়েক পুর প্রশাসন বোর্ডের সভাপতি পদে ছিলেন তিনি। মাঝে পাঁচ বছর ছিলেন রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক। সে বার বিধানসভা ভোটের দেড় বছর আগে যোগ দেন তৃণমূলে। ২০১১ সালের নির্বাচনে তাঁকেই প্রার্থী করে তৃণমূল। প্রার্থিপদের বাকি সব দাবিদারকে টপকে প্রার্থী হয়ে জিতেও যান পার্থসারথী। পরের বার অবশ্য কংগ্রেসের শঙ্কর সিংহের কাছে হেরে যান। দল বদলে শঙ্কর এখন তৃণমূলে এবং এ বার তিনিই এই কেন্দ্রে দলের টিকিটের অন্যতম প্রধান দাবিদার।
দিন কয়েক আগেই রানাঘাট মহকুমার শান্তিপুরের তৃণমূল বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। গত লোকসভা ভোটেই এই মহকুমায় পদ্ম ফুটেছে। রানাঘাট শহরেও এগিয়ে ছিল বিজেপি। আবার রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম কেন্দ্রেও প্রচুর ব্যবধানে বিজেপি এগিয়ে ছিল। তার উপর পার্যসারথীর যোগদান তাদের বাড়তি সুবিধা দিতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। এর পরে পুরভোট হওয়ারও সম্ভাবনা। সেখানেও প্রভাব পড়তে বাধ্য।
রানাঘাট শহরে তেমন প্রভাবশালী বিজেপি মুখ নেই। সে ক্ষেত্রে টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রে বিজেপি নেতৃত্বের সামনে পার্থসারথীর নামই কি আগে উঠে আসবে না? আর তা যদি আসে, বিজেপির পুরনো নেতাকর্মীরা কি মুখ বুজে তা মেনে নেবেন?
বিজেপির রানাঘাট শহর মণ্ডলের সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় প্রামাণিক বলেন, “আমাদের দল দলের অনুশাসন মেনেই চলবে। যাঁরা আসছেন, তাঁদের নেতৃত্বেই যে দল চলবে এমনটা নয়। দলীয় নেতৃত্বই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। যাঁরা আসছেন, তাঁরা তো এখন আমাদের পরিবারেরই অঙ্গ।” রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলছেন, “ভাল মানুষদের আমাদের দলে স্বাগত জানাই। কাকে কোথায় কী ভাবে ব্যবহার করা হবে সেই সিদ্ধান্ত দল নেবে।”
আর জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র বাণীকুমার রায়ের দাবি, “তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে পার্থসারথী দলে ছিলেন না। পরে সুযোগ বুঝে দলে আসেন। তিনি চলে যাওয়ায় দলের কোনও ক্ষতি হবে না। কর্মী এবং মানুষ তৃণমূলের সঙ্গেই আছেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement