উৎসবে নজর কাড়ল এই মিষ্টিও। নিজস্ব চিত্র
আচার হয়, পকোড়া হয়, হয় আরও অনেক কিছুই। তা বলে রসগোল্লা? তাও আবার লঙ্কার!
টপ করে একটা মুখে পুরে, কায়দা করে সেটাকে বাগে এনে কলেজ ছাত্রী সৌমিতা সরকার বললেন, ‘‘একটা খেয়েই দেখুন না। প্রেমে পড়ে যাবেন। মিষ্টির সঙ্গে হালকা একটু ঝাল। বেশ ফুচকা-ফুচকা একটা ব্যাপার আছে।’’
দু’দিনের মেলা। মেলার নাম রসগোল্লা মেলা। রানাঘাট পুরসভার উঠোনের এই মেলায় রসগোল্লার রকমফের দেখে আপ্লুত মিষ্টিপ্রেমীরা।
সামান্য ছানার গোলা। চিনির রসে ফুটলে তা যে এমন মহার্ঘ্য হতে পারে, তা সেই কবেই বাঙালি ময়রা আবিস্কার করেছেন। হালে তার ‘জিআই’ তকমা পকেটে পুরেছে এ রাজ্য। তাতে রানাঘাটেরও কিছু অবদান রয়েছে বলে মনে করেন এ শহরের বাসিন্দারা। ওডিশার সঙ্গে টক্করে এমন জয় উদযাপনের জন্যই এমন মেলা। বলছেন উদ্যোক্তারা।
শনিবার শুরু হয়ে শেষ হল রবিবার। এই উৎসবে স্টল দিয়েছে শহরের নামকরা ষোলোটি মিষ্টির দোকান। তেমন প্রচার না থাকলেও মুখে মুখে মেলার কথা এমন ছড়িয়েছে যে, ভিড় দেখে তাজ্জব উদ্যোক্তারা পর্যন্ত। শহর তো বটেই, দূর গ্রামের বাসিন্দারা পর্যন্ত মেলায় এসে চেখে দেখেছেন বাহারি রসগোল্লা।
‘বাহারিই বটে।’ বললেন শহরের মাঝবয়সী এক স্কুল শিক্ষক শ্যামল হালদার। তাঁর কথায়, ‘‘এত ধরনের রসগোল্লা তো দেখিনি। চিনি-নলেন গুড়ের রসগোল্লা তো আছেই। সঙ্গে বেকড রসগোল্লা, টু-ইন ওয়ান, কেশর রসগোল্লা, গাজরের রসগোল্লা, কাঁচা লঙ্কার রসগোল্লা, তুলসী পাতার রসগোল্লা, ধনে পাতার রসগোল্লা।’’ শহরের এক মিষ্টি ব্যবসায়ী সোমনাথ কুণ্ডু ধরিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘আরও আছে। কমলালেবু, স্ট্রবেরি আর বেদানার রসগোল্লা।’’ মেলায় সাড়া কেমন তা বোঝাতে একটা তথ্য যথেষ্ট। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত নামতেই সব রসগোল্লা বিলকুল উধাও। রানাঘাটের পুরপ্রধান পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এমন সাড়া পাব ভাবতেই পারিনি। আগামী দিনে ছোট জায়গায় এই উৎসব করা যাবে না। বড় জায়গা লাগবে।”
উৎসব কমিটি সম্পাদক রানাঘাট পুরসভার এক কাউন্সিলর কোশলদেব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পরের বছর থেকে বর্ধমানের মিহিদানা,শক্তিগড়ের ল্যাংচা, মুর্শিদাবাদের ছানাবড়া হাজির করানো হবে।” তিনি জানান, শহরে ৩৫ জন মিষ্টি ব্যাবসায়ীর কাছে স্টল দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। ১৬ জনকে নিয়েই পথ চলা শুরু হল।