আজ থেকে চলবে ট্রেন। তার আগে প্রস্তুতি বহরমপুরে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
রেলের আদর্শ আচরণবিধি মেনে টানা সাত মাসের নীরবতা ভেঙে আজ বুধবার ভোরে লালগোলা থেকে রেল ছুটবে শিয়ালদহের পথে। লকডাউনের পরে নিউ নর্মাল জীবনে রেল যাত্রা শুরু হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবে খুশী জেলাবাসী। পূর্ববর্তী সময় সূচি ও ট্রেন নম্বর অনুযায়ী একজোড়া লালগোলা-শিয়ালদহ প্যাসেঞ্জারের পাশাপাশি আপ ডাউন মিলিয়ে আরও চার জোড়া লালগোলা-রানাঘাট ট্রেন চলবে পূর্বরেলের লালগোলা-শিয়ালদহ শাখায়। রেলের নির্দেশ মতো এক জন রেলকর্মীর তত্তাবধানে শুধুমাত্র বহরমপুর স্টেশনেই থাকবে যাত্রীদের জন্য লিকুইড শোপ। বিধি মেনে যাত্রী ওঠা নামায় থাকবে পুলিশি নজরদারি।
যাত্রী সুরক্ষায় স্টেশনে ঢোকা বেরোনোয় থাকবে নিয়ন্ত্রিত যাতায়াত, দাবি স্টেশন কতৃপক্ষের। সব ব্যবস্থাই মঙ্গলবার রাতের মধ্যে প্রস্তুত রাখার নির্দেশ এসেছে বলেও জানান তাঁরা। তবে লালগোলা থেকে ছাড়া ও শিয়ালদহ পৌঁছনোর আগের সময়ের কোনও পরিবর্তন না হওয়ায় যাত্রী নামা ওঠার ক্ষেত্রে প্রত্যেক স্টেশনে নিউ নর্মালে অতিরিক্ত কতক্ষণ ট্রেন স্টেশনে অপেক্ষা করবে তা নিয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট নির্দেশ নেই স্টেশন কর্তৃপক্ষের কাছে।
আবার যে ভিড়ের ভয়ে এতদিন বন্ধ ছিল রেল পরিষেবা পূর্ব রেলের এই শাখায় একজোড়া লালগোলা-শিয়ালদহ প্যাসেঞ্জার চলায় সেই ভিড়ের আশঙ্কাই করছেন ব্যবসায়ী থেকে যাত্রীরা। বহরমপুরে মঙ্গলবার সাপ্তাহিক ব্যবসা বন্ধ থাকায় ওই দিন অধিকাংশ ব্যবসায়ী কলকাতা যেতেন ট্রেনেই। বেশি ট্রেন যখন চলত, তখনও মঙ্গলবার ট্রেনে যাত্রীদের ভিড় হত। তবু সেক্ষেত্রে ইচ্ছে করলে কেউ পরের ট্রেনে যেতে পারতেন। কিন্তু এখন হয় তাঁকে ট্রেন ছেড়ে সড়ক পথে কলকাতা যেতে হবে নয়ত ট্রেনের অপেক্ষায় এক সপ্তাহ পিছিয়ে যাবে তাঁর কলকাতা যাওয়া। সেকথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বহরমপুর ক্লথ মার্চেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিষ্ণু দত্ত বলেন, “এক জোড়া ট্রেন হওয়ায় ওই গাড়িতে ভিড় উপচে পড়বে এমনকি আগের তুলনায় তা বেশিই হবে। ফলে যে সংক্রমণের ভয়ে এতদিন ট্রেন বন্ধ থাকল সেই সংক্রমণ আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা হয়।”
আবার বাকি চার জোড়া ট্রেনের গন্তব্যস্থল লালগোলা থেকে রানাঘাট ও রানাঘাট থেকে লালগোলা। সেক্ষেত্রে রানাঘাটে পৌছে ট্রেন পরিবর্তন করে রানাঘাট থেকে শিয়ালদহ যাতায়াতের ট্রেন সেই সময় আছে কি না, তা নিয়েও ধন্দে রয়েছেন যাত্রীরা। নিত্যযাত্রী অম্লান দত্ত বলেন, “একদিকে হয় অনির্দিষ্টকাল অপেক্ষা নয়ত খুব অল্প সময় সেক্ষেত্রে ওই স্টেশনে অপেক্ষা করতে হবে যাত্রীদের। আবার অল্পসংখ্যক ট্রেন চলাচল করায় স্বাভাবিকভাবেই সেই ট্রেন ধরার তাড়া থাকবে তাঁদের। ফলে আচরণবিধি ভাঙার আশঙ্কা থাকবে।”
এখনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পঠনপাঠন শুরু হয়নি। কিন্তু পড়ুয়াদের মিড ডে মিল দিতে ও অন্য কাজ কর্মের জন্য বিদ্যালয়ে সড়ক পথে যেতে হয় শিক্ষকদের। কিন্তু তাঁদের কাছেও আশঙ্কা যাত্রী ভিড়। শিক্ষিকা শতাব্দী আঢ্য বলেন, “ যে ভিড়ের ভয়ে এতদিন রেল পরিষেবা বন্ধ ছিল কম ট্রেন চলায় সেই ভিড় আটকানো মুশকিল হবে। ফলে সংক্রমণের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।”