থমকে কাজ। নিজস্ব চিত্র।
জমি নিয়ে জটিলতায় আটকে গিয়েছিল বহরমপুরে বাইপাস রাস্তা তৈরির কাজ। গত বছর জমি-জট কাটতে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জানিয়ে ছিলেন, ২০২১ সালের মার্চ মাসের মধ্যে ওই রাস্তার কাজ শেষ হবে। সেই মতো সেই সময় কাজও শুরু হয়েছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণ আর তারে জেরে লকডাউন শুরু হলে বাইপাস রাস্তার কাজ থমকে যায়। তারপর থেকে কয়েক মাস অতিবাহিত হলেও এখনও কাজ শুরু হয়নি। সেই কাজ ফের কবে শুরু হবে, তা-ও সঠিক জানাতে পারেননি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে রাস্তার কাজ শেষ হওয়া নিয়েই অনিশ্চয়তা।
জাতীয় সড়কের মালদহ ডিভিশনের প্রকল্প আধিকারিক দীনেশ হংসরিয়া বলেন, ‘‘২০২১ সালের মার্চ মাসে কাজ শেষ করার লক্ষ্য থাকলেও মাঝে করোনার কারণে কাজ থমকে যায়। বাইপাস রাস্তার কাজ যাতে দ্রুত শুরু করা যায়, সেই চেষ্টা করা হবে।’’
বহরমপুর শহরের মাঝখান দিয়ে চলে গিয়েছে লালগোলা-শিয়ালদহ রেলপথ। এ ছাড়া, শহরকে দু’ভাগ করে বেরিয়ে গিয়েছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কও। যার জেরে বহরমপুরে যানজট লেগেই থাকে। অন্যদিকে, ২০০৯ সাল নাগাদ ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের সময় বহরমপুরে যানজট কমাতে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ বহরমপুরে বাইপাস রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা নেন। সেই মতো বহরমপুর থেকে চার কিমি দূরে বলরামপুরে বাইপাস রাস্তার কাজ শুরু হওয়ার কথা। সেখান থেকে মানকরা হয়ে ভাগীরথীর ওপর দিয়ে বাসুদেবখালি হয়ে খাগড়াঘাট স্টেশনে পাশ দিয়ে ফতেপুরের কাছ পর্যন্ত প্রায় ১১ কিমি রাস্তা হবে। রাস্তার দু’দিকের লেনেই কাজ শুরু হয়েছিল। ভাগীরথীর ওপর দ্বিতীয় সেতুর কাজও শুরু হয়। কিন্তু বহরমপুরের বাসুদেবখালিতে জমি-জটে আটকে যায় রাস্তার কাজ। সেখানে ৫৩টি বাড়ি জাতীয় সড়কের অধিগ্রহণ করা জমিতে পড়েছিল। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে জেলা পুলিশ-প্রশাসনের সহায়তার ওই জমি খালি করা হয়। তারপরই জমি নিয়ে জট কাটে। তার পরেও রাস্তার কাজ থমকে থাকায় ক্ষুব্ধ শহরবাসী।
বহরমপুরের বাসিন্দা বাপ্পা সরকার বলেন, ‘‘বাইপাস রাস্তা হবে শুনে ভেবেছিলাম এবার হয় তো যানজটের হাত থেকে রক্ষা পাব। কিন্তু এখনও তো রাস্তাই হল না।’’ মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন মণ্ডল বলেন, ‘‘জমি নিয়ে জটিলতা নেই। তবুও কাজ থমকে রয়েছে। যাতে দ্রুত বাইপাস রাস্তার কাজ শেষ হয়, সে বিষয়ে আমরা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।’’ জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, ফরাক্কা থেকে বহরমপুর বাইপাস রাস্তা মিলিয়ে জাতীয় সড়কের মালদহ ডিভিশনে মোট ১০০ কিমি রাস্তা রয়েছে। তার মধ্যে ৮৯ কিমি রাস্তার কাজ আগেই শেষ হয়েছে। বাকি ১১ কিমি বাইপাস রাস্তা, আগামী মার্চের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা ছিল।