— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মিড ডে মিলে শিশুদের ঠিক ভাবে খাবার দেওয়া হয় না। দুই শিক্ষকের মতভেদে পঠনপাঠনেরও ক্ষতি হচ্ছে। এমনকি, স্কুল চত্বর অপরিষ্কার। এই সব কারণে সোমবার তেহট্ট থানার অন্তর্গত আরশিগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিক্ষোভ দেখালেন পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা। বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় তেহট্ট থানার পুলিশ ও স্কুল পরিদর্শক কার্যালয়ের কর্মীরা। তাঁদের তৎপরতায় বিক্ষোভ ওঠে।
অভিভাবকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, আরশিগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট ৪২ জন ছাত্রছাত্রী আছে। স্কুলে মাত্র এক জন করে শিক্ষক ও শিক্ষিকা। ওই দু’জনের মধ্যে এক জন নগরউখড়ার এবং অন্য জন তেহট্টের বাসিন্দা। অভিভাবকদের অভিযোগ, দু’জনের মধ্যে কোন রকম মিলতাল নেই। তাঁরা স্কুলেও নিজেদের মধ্যে ঝামেলা করেন। এর ফলে পঠনপাঠন ঠিক ভাবে হচ্ছে না। মিড ডে মিলও ঠিক করে ছাত্রছাত্রীরা পায় না। প্রতি দিন সয়াবিনের তরকারি আর ভাত দেওয়া হয়। ভুলক্রমে কোনও দিন ডিম। বার বার বললেও এর কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ। এমনকি, ১০ জন ছাত্রছাত্রী উপস্থিত থাকলেও হাজিরার খাতায় তা বাড়িয়ে দেখানো হয় বলে অভিযোগ।
স্কুলের ছাত্র আকাশ মণ্ডল বলে, “কোনও দিনই ভাল তরকারি দেওয়া হয় না। স্কুলে শৌচাগার থাকলেও তা নোংরা। তাই স্কুল চলাকালীন যদি শৌচকর্মের দরকার হয় তবে আমাদের বাড়ি যেতে হয়। এমনকি, স্কুলের দোতলায় ক্লাসের সামনে সিঁড়িতে পায়রার বিষ্ঠায় ভর্তি। আমরা পরিষ্কার করার কথা বললেও কোন দিন পরিষ্কার করে না।”
এক পড়ুয়ার অভিভাবক সুজিত হালদার বলেন, “আমরা চাই স্কুলে যেন ঠিক ভাবে পড়াশোনা করানো হয়। মিড ডে মিল দেওয়া হয়। স্কুল চত্বর পরিষ্কার রাখা হয়। এই দাবিতেই এ দিন বিক্ষোভ দেখাই। স্কুল পরিদর্শক অফিস থেকে কর্মী এসে আমাদের আশ্বাস দেওয়ায় আমরা বিক্ষোভ তুলে নিয়েছি।”
ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সীমা হালদার বলেন, “আমি পড়ুয়াদের ঠিক মতো মিড ডে মিল দিই। কেউ কোনও অভিযোগ এত দিন করেনি। আমি অভিভাবকদের বলেছি মিড ডে মিলের জন্য যে টাকা সরকার অনুমোদন করে তাই দিয়ে কী কী খাওয়ানো হবে তা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে হয়।’’ তিনি আরও বলেন, “আমি চারটের আগে আমার সহকর্মীকে স্কুল থেকে বার হতে দিই না বলে উনি আমার সম্পর্কে এই ধরনের কথা রটিয়ে বেড়াচ্ছেন। ওঁর সঙ্গে আমার সম্পর্ক খারাপ করার কোনও কারণ নেই।” যদিও ওই শিক্ষক গৌর রায় বলেন, “আমি স্কুলে কোনও রকম অনিয়ম করতে দিই না বলে আমি ওঁর কাছে খারাপ।”
স্কুল পরিদর্শক অফিসের কর্মী প্রশান্তকুমার বিশ্বাস বলেন, “আমি সমস্ত বিষয় অভিভাবক ও শিক্ষকদের কাছ থেকে শুনলাম। সব কিছু আমি স্কুল পরিদর্শককে জানাব। তার পর উনি যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবেন।”