বর্ধমান স্টেশনে জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ার পরের মুহূর্তের ছবি। —ফাইল চিত্র।
বর্ধমান স্টেশনে ট্যাঙ্ক বিপর্যয়ের পরেই বিপজ্জনক সব জলাধার ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূর্ব রেল। এ কথা জানিয়েছেন পূর্ব রেলের মূ্খ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র। তিনি বলেন, ‘‘আগামী এক বছরের মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ফেলা হবে বলে আশা করছি।’’
কৌশিক জানান, বিভিন্ন স্টেশনে যতগুলি জলের ট্যাঙ্ক আছে তার মধ্যে অনেকগুলিই ব্রিটিশ আমলে তৈরি। ওই তালিকায় রয়েছে হাওড়া ডিভিশনের তিনটি, আসানসোল ডিভিশনের আটটি এবং মালদহ ডিভিশনের একটি জলের ট্যাঙ্ক। বিপদ এড়াতে এই সব ক’টি ট্যাঙ্ককেই ভেঙে ফেলা হবে। পূর্ব রেলের অধীনে বিভিন্ন স্টেশনের চত্বরে মোট ৪৮টি জলাধার আছে। সেগুলির সব ক’টিকেই নষ্ট করে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই তালিকায় আছে শিয়ালদহ ডিভিশনে সাতটি, আসানসোল ডিভিশনের ২৩টি, হাওড়া ডিভিশনে ১৪টি এবং মালদহ ডিভিশনে চারটি ট্যাঙ্ক। কৌশিক বলেন, “আরও কিছু জলাধার চিহ্নিত করা হয়েছে। বিপজ্জনক হিসেবে সেগুলিকেও পরে নষ্ট করে ফেলা হবে। আপাতত নষ্ট করার আগে সব চিহ্নিত জলাধারগুলিতে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক জল ভরা হবে। যদি মনে হয় কোনওটির রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন সেগুলির সংস্কার করা হবে। সে কাজেও হাত দেওয়া হয়েছে।”
হেরিটেজ স্টেশনের তকমা পাওয়া বর্ধমান স্টেশনে গত ১৩ ডিসেম্বর দুপুর ১২টা নাগাদ বিপর্যয় ঘটে। স্টেশনের ২ এবং ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মধ্যে থাকা ১৮৯০ সালে তৈরি ট্যাঙ্ক আচমকা ভেঙে যায়। ভিড়ে ঠাসা প্ল্যাটফর্মের শেডের উপর আছড়ে পড়ে বিপুল পরিমাণ জল ও ভাঙা ট্যাঙ্কের ধাতব অংশ। ওই দুর্ঘটনায় চার জনের মৃত্যু হয়। মৃতদের নাম ক্রান্তি বাহাদুর (১৪), সোনারাম টুডু (৩৫), মফিজা বেগম (৩৫) এবং সুধীর সূত্রধর। ক্রান্তি এবং সোনারাম দু’জনেই ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। বর্ধমান শহরের লাকুড্ডির বাসিন্দা ছিলেন মফিজা। অন্য দিকে, জখম অবস্থায় সুধীরকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও, রবিবার সকালে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে। এই দুর্ঘটনার জেরে জখম হন আরও ৩৪ জন। জখমদের সবাইকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।