প্রতীকী ছবি।
মরসুমের শুরুতে অতি-বৃষ্টির জেরে এ বারে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় আলু চাষের ক্ষতি হলেও মুর্শিদাবাদে তার প্রভাব পড়েনি। যার জেরে দক্ষিণবঙ্গের আলু উৎপাদক জেলাগুলিতে আলুর উৎপাদন কম হলেও মুর্শিদাবাদে আলুর উৎপাদন ভালই হয়েছে। বরং এ বারে আলুর দামও ভাল থাকায় মুর্শিদাবাদের আলু চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে।
এখন আলুর যে দাম চলছে তাতে বিঘা প্রতি ২৫-৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত আলু চাষে লাভ হচ্ছে বলে জেলার আলু চাষিরা জানিয়েছেন।
তাঁরা জানাচ্ছেন, এই জেলাতেও মরসুমের শুরুতে বৃষ্টি হয়েছে। তবে খুব বেশি বৃষ্টি হয়নি। যার জেরে অন্য জেলার মতো আলু চাষে ক্ষতি হয়নি। ফলে আলুর উৎপাদন ভাল হয়েছে। তাঁদের দাবি, এ বারে মুর্শিদাবাদে বিঘা প্রতি ৪০-৫০ কুইন্টাল পর্যন্ত আলু উৎপাদন হয়েছে।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদে আলু চাষ হয় প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে। যার সিংহভাগ আবার কান্দি মহকুমায় চাষ হয়। এ বারেও ১৩ হাজার হেক্টর জমিতেই আলু চাষ হয়েছিল। ইতিমধ্যে জমি থেকে অধিকাংশ আলু তুলে নেওয়া হয়েছে।
মুর্শিদাবাদের উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) মোহনলাল কুমার বলছেন, ‘‘পড়শি কয়েকটি জেলায় বৃষ্টির জেরে আলুর ক্ষতি হলেও এবারে মুর্শিদাবাদে আলুর উৎপাদন স্বাভাবিক হয়েছে। যার জেরে এই জেলার চাষিরা আলু চাষ করে খুশি হয়েছেন।’’
কৃষকরা জানান, এক বিঘা আলু চাষ করতে ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ হয়। আলুর উৎপাদন ভাল হলে বিঘা প্রতি ৪০-৫০ কুইন্ট্যাল পর্যন্ত আলু উৎপাদন হয়। এবছর জেলায় আলুর উৎপাদন ভাল হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলায়। বড়ঞার পারশালিকা গ্রামে আলু চাষি নিরঞ্জন ঘোষ বলছেন, ‘‘এবছর আমাদের এলাকায় আলুর উৎপাদন ভাল হয়েছে। আলুর দাম ১১০০-১২০০ টাকা কুইন্টাল রয়েছে। এই দাম থাকার ফলে খরচ বাদ দিয়ে বিঘাপ্রতি ৩০ হাজারের কাছাকাছি আলু চাষে এ বারে কৃষকদের লাভ হচ্ছে।’’
আলু ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, এ বছর পাইকারি বাজারে আলুর দাম ১৩০০-১৫০০ টাকা কুইন্টাল রয়েছে। গত বছর এই সময় আলুর দাম তার অর্ধেক ছিল। যার জেরে কৃষকরা এ বারে আলুর দাম পাচ্ছেন। মুর্শিদাবাদের পাইকারি আলু ব্যবসায়ী তথা মুর্শিদাবাদ-জিয়াগঞ্জ ব্লকের একটি হিমঘরের মালিক রামচন্দ্র ভকত বলছেন, ‘‘দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় আলু চাষ বৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার জেরে এখন আলুর দাম ভাল রয়েছে। অন্যদিকে মুর্শিদাবাদে আলুর উৎপাদন ভাল হয়েছে। যার জেরে এই জেলার চাষিরা ভাল দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন।’’