ফাইল চিত্র।
রাস্তা প্রায় ফাঁকা। চালকুমড়ো এবং ওল নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন বছর পঞ্চাশের এক ব্যক্তি। পথে প্রতিবেশীর সঙ্গে দেখা হতে তিনি বলেন, “বাজারে সস্তা বলতে এই দুটো জিনিস। অন্য কোনও আনাজে হাত দেওয়ার উপার নেই। ত্রিশ টাকা কিলোগ্রাম দরে ওল পাওয়া যাচ্ছে। পনেরো টাকায় এই চালকুমড়ো পেয়েছি। কাঁচা লঙ্কায় হাত দেওয়ার উপায় নেই। এ সব খেয়ে বেঁচে আছি।’’
আমপানের ঝড়ে চাষের যা ক্ষতি হওয়ার তা তো হয়েছিলই। যেটুকুও বা বেঁচেছিল, টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তা এখন জলের তলায়। চাষিরা জানাচ্ছেন, যাঁরা একটু উঁচু জমিতে আনাজের চাষ করেছিলেন, সেই জমিতেও জল জমেছে। নিচু জমিতে জল এত জমেছে যে, খেত কোথায় বোঝা যাচ্ছে না। ফলে, বাজারে আনাজের জোগান তলানিতে। আর তাতেই বেড়েছে আনাজের দাম। তা এতই যে, মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।
কল্যাণী ব্লকের সরাটির চাষি নুর ইসলাম মণ্ডল বলেন, “টানা বৃষ্টিতে সব শেষ হয়ে গিয়েছে। আনাজ আসবে কোথা থেকে। বৃষ্টি তো হয়েই চলেছে। থামবার কোনও লক্ষণ দেখছি না। এখন এ ভাবেই চলবে।” চাকদহের শিমুরালির বাসিন্দা চাষি প্রবীর ঘোষ বলেন, “জমিতে যেতে খারাপ লাগছে। যে দিকে তাকাছি, জল আর জল।’’
আনাজের দর
পটল: ৪০-৬০ টাকা
কাঁচকলা: ৪০ টাকা
বেগুন: ৫০-৬০ টাকা
ঝিঙে: ৩০ টাকা
লঙ্কা: ১৫০ টাকা
কুমড়ো: ২৫-৩০ টাকা
উচ্ছে: ৬০-৭০ টাকা
পেঁপে: ৪০ টাকা
টোম্যাটো: ৭০-৮০ টাকা
ঢেঁড়শ: ৪০ টাকা
ওল: ৩০-৪০ টাকা
চালকুমড়ো: ২০ টাকা/ প্রতি
*দর প্রতি কিলোগ্রামে
রবিবার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেল, আনাজের দাম চড়া। অনেক বিক্রেতা কাছে আনাজও সে ভাবে ছিল না। কয়েক জন নিম্নমানের আনাজ বিক্রি করেছেন। ব্যবসায়ীদের একাংশ জানান, আলু, পেঁয়াজের দাম কমার কোনও লক্ষণ নেই। প্রশাসনের কড়াকড়িতে দাম একটু কমেছিল। কিন্তু এখন ফের দাম চড়ছে। অন্য দিকে, কাঁচা আনাজের জোগান একেবারে কমে দিয়েছে। ফলে, সব মিলিয়ে বাজারের আনাজের দামে আগুন লেগেছে বলা যেতে পারে।
আনাজ বিক্রেতা আজমল মণ্ডল বলেন, “সাধারণ মানুষ কিনতে পারে, আমি সেই ধরনের আনাজ বেশি বিক্রি করি। তা কেনার মতো আনাজ বাজারে দেখছি না। তাই ঝড়তিপড়তি আনাজ নিয়ে বসেছি। বাজারে লোকজনও অনেক কম। অন্য রবিবারে আনাজ কেনার জন্য ঠেলাঠেলি শুরু হয়ে যায়। আজ তো প্রায় চুপচাপ বসে রয়েছি।”