ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া
রেজিনগর শিল্পতালুকের জমির দাম কমালে সেখানে অনেকে শিল্প গড়তে আগ্রহী, মাস পাঁচেক আগেই রাজ্য সকারকে এমন চিঠি দিয়েছিলেন ক্ষুদ্র উদ্যোগপতিরা। তাতে সাড়া না মেলায় মাস দু’য়েক আগে বহরমপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠকে একই দাবি করতেই আশ্বাস মিলেছিল। কিন্তু এখনও দাম না কমায় সমস্যায় মুর্শিদাবাদের উদ্যোগপতিরা। মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘এই মুহুর্তে রেজিনগর শিল্পতালুকে শিল্পকারখানা গড়ার জন্য অন্তত পক্ষে তিন জন উদ্যোগপতি আগ্রহী। জমির দাম কমালেই তাঁরা সেই জমি নেবেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসের পরেও এখনও দাম কমেনি। আমরা চাই সরকার এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিক।’’
জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলছেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগমের সঙ্গে কথা বলব।’’ মুর্শিদাবাদ জেলা শিল্প কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার নিরঞ্জন বিশ্বাস বলছেন, ‘‘এ বিষয়ে রাজ্য থেকে এখনও সবুজ সঙ্কেত আসেনি। রাজ্য থেকে সবুজ সঙ্কেত এলেই উদ্যোগপতিদের বিষয়টি জানানো হবে।’’
মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্সের জেলা সহ সভাপতি হুমায়ুন কবীর বলছেন, ‘‘আমি খাটের গদি তৈরির কারখানা করতে চাই। এ জন্য একলপ্তে ১৫ বিঘা জমি প্রয়োজন। কিন্তু বাজার দরের থেকে রেজিনগরের শিল্পতালুকের জমির দাম অনেক বেশি। তাই দাম কমানোর দাবি জানাচ্ছি। সেখানে কারখানা হলে অন্তত পক্ষে একশো জনের কর্মসংস্থান হবে।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর ২০০৮ সালে তৎকালীন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য রেজিনগর শিল্পতালুকের শিলান্যাস করেন। রেলস্টেশনের কাছাকাছি এবং ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া ১৮৭ একর জমির উপরে এই শিল্পতালুক গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে নিকাশি, জল, বিদ্যুতের ব্যবস্থা রয়েছে। ক্ষুদ্র শিল্প কারখানার জন্য ১১২ একর জমি ব্যবহার করা যাবে। তাতে ৩২০টি তৈরি প্লট করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৭১টি প্লট বিলি করা হয়েছে। তার মধ্যে একটিতে ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার একটি গোডাউন, সেখানে কর্মতীর্থ বাজারের দু’টি স্টল চালু রয়েছে। কয়েকটি প্লটের নির্মাণ কাজ চলছে।
রেজিনগর শিল্পতালুকের সাফল্য কীভাবে আসবে তা নিয়ে দু’মাস আগে মুখ্যমন্ত্রী বহরমপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে এসে উদ্যোগপতিদের এমন প্রশ্ন করেছিলেন। মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্সের যুগ্ম সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য ওই বৈঠকে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছিলেন, ‘‘এই শিল্পতালুকের জমির দাম বেশি। দাম কমালে এবং ঋণদানের ক্ষেত্রে গড়িমসি না হলে এই শিল্পতালুকে সাফল্য আসবে।’’ বিষয়টি জানার পরেই মুখ্যমন্ত্রী জেলা শিল্প কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার নিরঞ্জন বিশ্বাসকে বিষয়টি দেখার জন্য বলেন। এ ছাড়া ব্যাঙ্কগুলি যাতে উদ্যোগপতিদের ঋণদানের ব্যবস্থা করেন সে বিষয়ে লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজারকে অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী। উদ্যোগপতিদের দাবি, রেজিনগর শিল্পতালুকের জমির দাম কাঠাপিছু ১ লক্ষ ২০ হাজার থেকে কমিয়ে ৮০ টাকা করার প্রস্তাব অনেক আগেই তাঁরা দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও সে কথা জানিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু এখনও কোনও ব্যবস্থা হয়নি বলে তাঁরা হতাশ।