প্রতীকী ছবি
ইদ মানেই লাচ্চা-সেমুই, পায়েস, দই-মিস্টি সহ রকমারি খাবার। কিন্তু এ বছর লকডাউনের কারণে লাচ্চা সেমুইয়ের দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। দাম বেড়েছে মাছ মাংসেরও। তবে স্বস্তি দই মিস্টিতে।
সামনেই খুশির ইদ। করোনা ভাইরাস ও লকডাউনে এ বছর ম্লান ইদের আনন্দ। লকডাউনে অনেক পরিবারের রোজগার বন্ধ প্রায় দু’মাস। তা ছাড়া অনেক পরিবারের লোকজন আটকে রয়েছেন ভিন্ রাজ্যে বা ভিন্ দেশে। এ বছর অনেক পরিবারেই হয়নি ইদের নতুন পোশাক। তবুও বাড়ির ছোটদের কথা মাথায় রেখে একটু লাচ্চা-সেমুইয়ের জোগাড় করতে গিয়েই হিমসিম খেতে হচ্ছে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের।
রমজান মাসের শুরুর দিকেও যে লাচ্চা-সেমুইয়ের দাম ছিল কেজি প্রতি ৫৫-৬০ টাকা, তা ইদের আগে বেড়ে দাড়িয়েছে ১২০ টাকায়। রমজানের শুরুতে বোদের দাম ছিল কেজি প্রতি ৭৫ টাকা, ইদের আগে দাম বেড়ে হয়েছে ১০০ টাকা কেজি। মাঝারি মানের খেজুর, খুরমা বিকোচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন লকডাউনে লাচ্চা-সেমুইয়ের কারখানা বন্ধ থাকায় জোগান কমেছে। তবে চাহিদা থাকায় চড়া দামে কিনেই বিক্রি করতে লাচ্চা-সেমুই। দৌলতাবাদের এক কারখানা মালিক বলছেন, ‘‘লকডাউনে এক মাসের বেশি সময় ধরে কারখানা বন্ধ ছিল। কারিগরেরও ঘাটতি। কাঁচামালের জোগানও কম। তাতেই দামও চড়েছে।’’
আলাউদ্দিন সেখ নামে হরিহরপাড়ার এক ব্যবসায়ী বলছেন, ‘‘ব্র্যান্ডেড কোম্পানির লাচ্চা সেমুইয়ের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ২০-২৫ টাকা। বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।’’
লকডাউনে ভিন্ রাজ্য থেকে আসা মাছ, সামুদ্রিক মাছের জোগান তেমন নেই। ফলে ইদের আগে হরিহরপাড়া, নওদার বাজারে নদী বা পুকুরের রুই কাতলা বিকোচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকা কেজি। পোল্ট্রি বা ব্রয়লার মুরগির মাংস বিকোচ্ছে ২০০ টাকা কেজি। খাসির মাংসের দাম ছুঁয়েছে কেজি প্রতি ৬৫০ টাকা। যা স্বাভাবিকের থেকে ৫০-৬০ টাকা বেশি। আলমগির শেখ নামে এক মাংস বিক্রেতা বলছেন, ‘‘লকডাউনে মুরগির জোগান কম। স্থানীয় খামারেও মুরগি নেই। ফলে দাম কিছুটা বেশি।’’ লাচ্চা-সেমুই, বোঁদে বা মাছ, মাংসের দাম বেশি হলেও স্বস্তি মিলেছে দই-মিষ্টিতে। লকডাউনে বাড়ন্ত গরুর দুধ। ফলে ইদের আগে দুধ, ছানার দাম কমেছে অনেকটাই। ৪০ টাকা লিটারের দুধ বিকোচ্ছে ২৫ টাকায়। ফলে সাধ্যের মধ্যে দই, মিষ্টি। হরিহরপাড়া, নওদা,ডোমকলের বাজারে সাধারণ সাইজের রসগোল্লা, ছানাবড়া মিলছে ৫-৬ টাকায়। দইও বিকোচ্ছে ৮০-১০০ টাকা কেজি। ইদের আগে দই-মিষ্টি তৈরিতে ব্যস্ত কারিগরেরাও। হরিহরপাড়ার মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী নবকুমার সাহা বলছেন, ‘‘লকডাউনে দীর্ঘদিন দোকান বন্ধ ছিল। ফলে এখনও দুধের দাম কম আছে। তাই মিষ্টির দামও নাগালে।’’ তবে চাহিদাও কম বলেই জানান তিনি।
তবে অনেক পরিবারেই হয় ঘরের ছেলে হোম কোয়রান্টিনে, বা ফিরতেই পারেননি। সেই চিন্তা কাটছে না।