পুরুষ কর্মীদের আনাগোনায় অস্বস্তিতে পড়েছেন জঙ্গিপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের প্রসূতিরা। লেবার রুম থেকে সিজারিয়ান ওটি ডিউটিতেও তাঁদের অবাধ চলাচলে অস্বস্তিতে মহিলারা। হাসপাতালের সে দিকে অবশ্য ভ্রূক্ষেপ নেই। জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগটা কার্যত তুলে দিয়ে প্রসূতিদের সুপার স্পেশ্যালিটিতে নিয়ে আসার পরেই এই নয়া বিপত্তির শুরু।
এই ঘটনায় তীব্র আপত্তি তুলে জঙ্গিপুরের তৃণমূল পুরপ্রধান মোজাহারুল ইসলামের অভিযোগ , “এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে, রোগী কল্যাণ সমিতিতে এ নিয়ে কোনও আলোচনা করা হয় নি। তা হলে মহিলা কর্মী নিয়োগ না করে নতুন ভবনে কেন সরানো
হল প্রসূতিদের?’’
ওই ওয়ার্ডে প্রায় দেড়শো প্রসূতি ভর্তি রয়েছেন। মহকুমা হাসপাতালের পুরোনো ভবনে এত দিন ওই মহিলা ওয়ার্ডটি চালু ছিল। সেখানে চিকিতসক ও নার্সরা ছাড়াও মহিলা জিডিএ কর্মীরা ডিউটি করতেন। প্রসূতিদের সাহায্য করতেন তারাই। কিন্তু সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিযুক্ত শতাধিক কর্মীর সকলেই পুরুষ। প্রসূতি ওয়ার্ডেও দিনে এবং রাতে তিন শিফটে ডিউটি করছেন পুরুষ হাউস কিপিং কর্মীরাই। ফলে নিজেদের সম্ভ্রম রক্ষা ও নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
একাধিক প্রসূতি ও তার পরিবারের লোকজন এ নিয়ে বার বার প্রতিবাদও জানিয়েছেন । কিন্তু কোনো ফল হয় নি। প্রসূতিদের অভিযোগ, ওয়ার্ডের মধ্যে বহু প্রসূতিই থাকে নানা অস্বস্তিকর অবস্থায়। সেখানে একাধিক পুরুষ কর্মী ওয়ার্ডের মধ্যে দিনে-রাতে সবসময় ডিউটি করায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আয়া রাখার ব্যবস্থা নেই। বাড়ির লোকের অবর্তমানে আগে মহিলা কর্মীরা শৌচাগারে যেতে সাহায্য করতেন। কিন্তু বর্তমানে মহিলা কর্মী না থাকায় সমস্যা পেকেছে।
সামিউল সেখের এক আত্মীয় ভর্তি রয়েছেন প্রসূতি বিভাগে। তার অভিযোগ, “প্রসূতিদের ওয়ার্ডে ডিউটি করছেন পুরুষ কর্মীরা। এমনকী ডেলিভারি রুম ও সিজারিয়ান রুমেও রয়েছেন তারা।’’ জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার শাশ্বত মন্ডল বলেন, “সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে কর্মী নিয়োগের সমস্ত দায়িত্ব স্বাস্থ্যভবন থেকে একটি বেসরকারি সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে। মহিলা কর্মী কেন নিয়োগ হয়নি তা জানেন সংস্থার সুপারভাইজররা। সেখানে আমাদের কিছুই করার নেই।”
কিন্তু সুপার হিসেবে প্রসূতিদের শালীনতা রক্ষা ও নিরাপত্তার দায়িত্বও তো আপনার? তাঁর কাছে মেলেনি কোনও সদুত্তর।