প্রবল গরমে অস্বস্তিটা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে লো-ভোল্টেজ। পাখা ঘুরছে তো ঘুরছে, লাইট জ্বলছে টিমটিম করে, চলছে না এসি মেশিনও! প্রশাসনের ডাকা এক সভায় আর পাঁচটা সমস্যার চেয়ে গত দু’দিনের লো-ভোল্টেজের সমস্যাই নাগরিকদের কথায় ফিরে এল বারবার।
নবগঠিত বেলডাঙা পুরসভার সমস্যাগুলির আশু সমাধান চেয়ে বুধবার ‘সম্পর্ক’ হলে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে সাধারণ নাগরিকদের কথোপকথনে শহরের নানা সমস্যার কথা উঠে আসে। কেউ শহরের নিকাশি ব্যবস্থা, কেউ বা যানজট নিয়ে সরব হন। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘‘জবরদখল হয়ে যাচ্ছে শহর। প্রায় ৩০০ বছরের প্রাচীন নিকাশি ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। দখলদারদের উচ্ছেদ না করলে শহর জলে ভেসে যাবে।’’
৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃণাল সাহা বলেন, ‘‘প্রায় ৩৫ বছরের পুরনো পুরসভায় কোনও ডাম্পিং গ্রাউন্ড নেই। ফলে আবজর্না ফেলা নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের খুব সমস্যায় পড়তে হয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রয়োজনের তুলনায় পানীয় জল কম মেলে। বিদ্যুৎ থাকলেও লো-ভোল্টেজের জন্য জেরক্স মেশিন, রেফ্রিজারেটর, কুলার বা এসি মেশিন সন্ধ্যা হলেই আর চলে না।’’
শিক্ষক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘যানজট শহরের একটা বড় সমস্যা।’’ ব্যবসায়ী সমিতির কর্তারা বলেন, ‘‘শহরকে ব্যবসার উপযুক্ত করে তুলতে হবে। যানজট মুক্ত করতে তাঁরাও এগিয়ে আসবেন।’’ তার সঙ্গে শহরে চলতি ট্রেড লাইসেন্স ফি কিছুটা কমানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়।
সব শুনে কংগ্রেসের পুরপ্রধান ভরত ঝাওর জানান, ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। একটি পুকুরের উপর অবৈধ নিমার্ণের খবর পেয়ে কাজ বন্ধের নোটিস পাঠানো হয়। কিন্তু তাতেও কাজ না হওয়ায় পুরসভার পক্ষে পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ ফুরকান শেখ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। তিনি বলেন, ‘‘১৩, ১৪ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডে লো-ভোল্টেজের ব্যাপারে সংশ্লষ্ট দফতরকে জানিয়েছি।’’ তাঁর অনুরোধ, ‘‘আমরা সব শ্রেণির মানুষের সহযোগিতা প্রার্থনা করছি। উন্নয়নে সমস্ত রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দফতরগুলিকে পাশে থাকার অনুরোধ করছি।’’
সভায় উপস্থিত বিদ্যৎ দফতরের বহরমপুর ডিভিশনের ম্যানেজার সুকান্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা বিদ্যৎ চুরি বন্ধের চেষ্টা চালাচ্ছি। বিদ্যুৎ চুরি বন্ধ ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে সচেতনতা বাড়লেই লো-ভোল্টেজের সমস্যা মিটে যাবে।’’