বিজেপি বুথ সভাপতিতে খুনের অভিযোগ। —প্রতীকী চিত্র।
বিজেপি নেতার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় জোর চাঞ্চল্য মুর্শিদাবাদের রেজিনগরে। মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে নিখোঁজ ছিলেন বিজেপির বুথ সভাপতির নাম ভানু মণ্ডল। পরে তাঁর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে একটি দিঘির পাড়ে। বিজেপির পক্ষ থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক খুনের অভিযোগ এনেছেন জেলা সভাপতি। যদিও এ নিয়ে পরিবারের তরফ স্পষ্ট করে কোনও অভিযোগ করেনি। তারা শুধু রাজনৈতিক যোগের অভিযোগ এনেছে।
পরিবার সূত্রে খবর, পেশায় টোটোচালক ভানু। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা নাগাদ তিনি বাড়ি থেকে বেরোন। তার পর অনেক ক্ষণ কেটে গিয়েছে। কিন্তু তিনি বাড়ি ফেরেননি। ওই দিন রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ তাঁকে ফোন করলে দেখা যায় সেটি বন্ধ। বার বার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। এর পর ভানুর খোঁজ শুরু করেন তাঁর বাড়ির লোকজন। রাত ১১টা নাগাদ পরিবারের লোকজন স্থানীয় একটি দিঘির পাড় থেকে তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ দেখতে পান।
পুলিশ সূত্রে খবর, যেখান থেকে দেহ উদ্ধার হয়েছে, সেখানে জুয়ার আসর বসেছিল। আগেও ওই জায়গায় পুলিশি অভিযান হয়েছে। গ্রেফতারও হয়েছেন কয়েক জন। কিন্তু পুলিশের যাতায়াত একটু কমলেই পুনরায় জুয়ার ঠেক বসে।
মৃতের জামাই সুরজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘এটা আত্মহত্যা নয়। স্পষ্ট খুন। শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ও গলায় ফাঁসের দাগ রয়েছে। উনি বিজেপির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও কোনও রাজনৈতিক শত্রুতা ছিল না। পুলিশ দোষীদের খুঁজে বের করুক।’’ ভানুপর ভাই লাল্টু বলেন, ‘‘ও ছোটখাটো ব্যবসা করত দাদা। টোটোও চালাত। কোনও নেশা ছিল না। ওকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে। কে করেছে সেটা খুঁজে বার করার দায়িত্ব পুলিশের। কিন্তু পুলিশ তাদের ভূমিকা পালন করছে না।’’
অন্য দিকে, বিজেপির জেলা সভাপতি শাখারভ সরকারের দাবি, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের আগে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করতে প্রথম খুন করল তৃণমূল। ভানু শুধু আমাদের বুথ সভাপতি ছিলেন না, তিনি এখানকার প্রথম সারির নেতাও ছিলেন। পঞ্চায়েত ভোটের আগে তাঁকে সরিয়ে দিয়ে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে শাসক দল।’’
যদিও এই সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে শাসক শিবির। মুর্শিদাবাদের সংসদ তথা তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের খান বলেন, ‘‘কী হয়েছে, কী ভাবে হয়েছে, তা পুলিশি তদন্তে প্রমাণ হবে। পুলিশ তদন্ত করছে। তবে শুনতে পেয়েছি নিজেদের মারামারি নিয়ে ঘটনা।’’
এই মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে শক্তিপুর থানার পুলিশ। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। মুর্শিদাবাদের জেলা পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, ‘‘পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। খুনের ধরন জানতে ময়নাতদন্তের জন্য দেহ পাঠানো হয়েছে।’’