মাটি মাফিয়া খুনে সূত্র খুঁজছে পুলিশ

মাস দুয়েক ধরে পুলিশের খাতায় সে ছিল পলাতক। সোমবার ভোরে অবশ্য বাড়ির অদূরের একটি ঠেক থেকে সেই মাটি মাফিয়া দেবু দাসের দেহ উদ্ধার হল। এ দিন নদিয়ার কল্যাণীর মাঝেরচর এলাকা থেকে বছর আটত্রিশের দেবুর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশের অনুমান, বিষাক্ত পানীয় খাইয়ে তাকে কেউ খুন করেছে। এলাকার ‘বেকার সমস্যা’ মেটাতে সরকারি জমির মাটি বিক্রির কারবার ফেদে বসে সে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৬ ০২:০৮
Share:

মাস দুয়েক ধরে পুলিশের খাতায় সে ছিল পলাতক। সোমবার ভোরে অবশ্য বাড়ির অদূরের একটি ঠেক থেকে সেই মাটি মাফিয়া দেবু দাসের দেহ উদ্ধার হল। এ দিন নদিয়ার কল্যাণীর মাঝেরচর এলাকা থেকে বছর আটত্রিশের দেবুর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশের অনুমান, বিষাক্ত পানীয় খাইয়ে তাকে কেউ খুন করেছে।

Advertisement

এলাকার ‘বেকার সমস্যা’ মেটাতে সরকারি জমির মাটি বিক্রির কারবার ফেদে বসে সে। ওই ‘কর্মসংস্থানের’ গুঁতোয় নাভিশ্বাস উঠেছিল এলাকার বাসিন্দাদের। প্রতিবাদ করলে জুটত হুমকি। জনতার ক্ষোভ আঁচ করে তার মাথা থেকে নাকি হাত সরিয়ে নিয়েছিল শাসক দলও। পুলিশ জানিয়েছিল, সে ছিল এলাকা ছাড়া। এই দেবুর দেহ উদ্ধার হল বাড়ির আশপাশের এলাকা থেকে। বিষাক্ত পানী বিষ মেশানো পানীয় বা খাবার খাইয়ে তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে সন্দেহ এলাকার বাসিন্দাদের। তাঁর পরিবারের এমন ধারণা থাকলেও, সরকারি ভাবে তারা পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি। পুলিশ দেহটি ময়না তদন্তে পাঠিয়েছে।

সিপিএম-তৃণমূলের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। কল্যাণী ব্লক তৃণমূলের সভাপতি অরূপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “যতদূর জানি, দেবুকে খুন করা হয়েছে। সিপিএম প্রার্থী অলকেশ দাসই এটা করিয়েছেন। সিপিএম দেবুকে ফের দলে চাইছিল। কিন্তু সে রাজি না হওয়ায় সিপিএম তাকে খুন করেছে।’’

Advertisement

অলকেশবাবু পাল্টা বলছেন, “এলাকার মানুষ জানেন, দেবু কাদের হয়ে কাজ করত। ভোটে কাজে লাগানোর জন্য তৃণমূলই তাকে ফের এলাকায় ফিরিয়েছিল।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাম আমলেই দেবুর উত্থান। তখন সে চোলাই-সহ বিভিন্ন ধরণের বেআইনি কাজ কারবারের সঙ্গে জড়িত ছিল।

জমানা বদলের পর সে তৃণমূলে যোগ দেয়। তারপরেই শুরু করে বেআইনি মাটির কারবার। এলাকায় এক সময় আবাসন দফতরের ইটভাটা ছিল। সেখানকার মাটি কেটে সে মাঝেরচর এবং আশপাশের এলাকার বেসরকারি ইটভাটাগুলিতে বেচত। লক্ষ লক্ষ টাকার মাটি বেচত সে। মাস দুয়েক আগে দেবু আনন্দবাজারকে জানিয়েছিল, বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্যই সে এমন কারবার করে।

তৃণমূলের ছত্রছায়ায় থাকলেও মাঝেমধ্যেই সে বেপরোয়া হয়ে উঠত। স্থানীয় যে তৃণমূল নেতাদের মদতে সে এমন কারবার ফেঁদেছিল, মাস দুয়েক আগে তাদেরই অগ্রাহ্য করতে শুরু করে সে। মাস দেড়েক আগে এলাকার তৃণমূলের লোকজন তার ঠেক জ্বালিয়ে দেয়। তার পর থেকে সে এলাকাছাড়া ছিল। কিন্তু, সোমবার ভোরে তার মৃতদেহ মিলল তার নিজের এলাকা থেকেই।

এ দিন রাতে সোমবার রাতে তার পুরনো ঠেকেই খানাপিনার আসর বসেছিল। ভোরের দিকে দেখা যায়, তার ঠেকের বাইরে তার দেহ পড়ে রয়েছে। পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে। দেবুর পরিবারের কেউ এ বিষয়ে মুখ খোলেননি। এমনকী বিষয়টি পুলিশকেও জানাননি। তবে জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘এই ঘটনায় একটি খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement