বৃহস্পতিবার খুনের ঘটনার পর তদন্তে পুলিশ। নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মৃতদেহ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র
উমরপুরে প্লাস্টিক কারখানায় ম্যানেজার কেতন বাদিয়ানির ঘর থেকে পুলিশ একটি ডায়েরি পেয়েছে, যার কয়েকটি পাতা ছেঁড়া। কেতনকে তাঁর ঘরে ঢুকে গুলি করে খুন করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, উমরপুর প্লাস্টিক শিল্পাঞ্চলের প্রায় ৬০টি কারখানার মধ্যে ৯৫ শতাংশেরই মালিক স্থানীয় বাসিন্দা। দু’চার জন বাইরের। এখান থেকে উত্তরবঙ্গ সহ অসম, ওড়িশা, দিল্লি সর্বত্রই বালতি, মগ, নানা ধরণের কৌটো, ঝুড়ি সহ প্লাস্টিকের যাবতীয় সরঞ্জাম রফতানি হয়। দৈনিক কয়েক কোটি টাকার ব্যবসা হত এখানে। প্রায় ২৫ বছরের প্লাস্টিক শিল্প তালুক হলেও পরে এসে মাত্র ১৪ বছরেই অন্যতম প্রধান প্লাস্টিক সরঞ্জামের উতপাদক সংস্থা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল কেতনের সংস্থাটি। মালিক খুব বিশ্বাসও করতেন কেতনকে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, ব্যবসাতে বেশ কিছু টাকা বাকিও পড়েছিল তাদের। এই ধারবাকির হিসেব ছিল একটি নিজস্ব ডায়েরিতে। সেটা থাকত ম্যানেজারের হেফাজতেই। পুলিশ সেই ডায়েরি পেলেও তার বেশ কিছু পাতা ছিঁড়ে নিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
প্রশ্ন উঠেছে সেখানেই। দুষ্কৃতীরা টাকা লুঠ করতে এসে চিনে নিয়েছে বুঝতে পেরে ম্যানেজারকে খুন করা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু ডায়েরির পাতা ছিঁড়ে নিয়ে যাবে কেন? কী ছিল ডায়েরির ওই পাতাগুলোতে?
ঘরের লকার থেকে টাকা লুঠ করা হয়েছে এটা নিশ্চিত হলেও তার পরিমাণ কত, এখনও তা স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে । দুষ্কৃতীরা সংখ্যায় ঠিক কত জন ছিল, তারা বহিরাগত বা গাড়ি নিয়ে তারা উমরপুরে এসেছিল কি না তাও পুলিশের কাছে পরিষ্কার নয়। তবে পুলিশের সন্দেহের তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে না কয়েক জন কর্মচারী থেকে স্থানীয় কয়েকটি প্লাস্টিক কারখানার মালিকও। পুলিশ তাই খোঁজ নিতে শুরু করেছে ওই ম্যানেজারের ঘনিষ্ট ছিল কারা। মালিকের কোথাও যাতায়াত ছিল কি না।
কারখানাটি আপাতত বন্ধ। যে ঘরে খুনের ঘটনা ঘটেছে সেটিকেও তালা বন্ধ করে রেখেছে পুলিশ। কর্মচারীদের বলা হয়েছে বাড়ি ছেড়ে পুলিশকে না জানিয়ে কোথাও বাইরে না যেতে। বৃহস্পতিবার ময়না তদনের পর তার দেহ নিতে জঙ্গিপুরের আসেন মৃতের ভাই শরদ বাদিয়ানি। তিনি অবশ্য এই মৃত্যু নিয়ে কিছু বলতে চাননি। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত দ্রত এগোচ্ছে, খুব শীঘ্রই দুষ্কৃতীরা ধরা পড়বে।