সিআইডি-র ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞদের অনুমান, একাধিক লোক ওই খুনে জড়িত ছিল। নিজস্ব চিত্র
রানিনগরে একই পরিবারের তিন জনকে গলার নলি কেটে খুনের ঘটনায় প্রতিবেশী আরও এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পলাশিপাড়া থানার পুলিশ। ধৃতের নাম কালু মণ্ডল। শুক্রবার তেহট্ট আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে সাত দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
গত ২ মে রাতে প্রৌঢ় ভাগচাষি ডমন রাজোয়ার, তাঁর স্ত্রী সুমিত্রা ও বিবাহিত মেয়ে মালা মণ্ডলকে খুনের অভিযোগে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল পাশের বাড়ির কৃষ্ণ মণ্ডলকে। দুই পরিবারের পুরনো বিবাদের জেরে এই খুন বলে প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন। সে ক্ষেত্রে অন্য এক প্রতিবেশীকে কেন খুন ও প্রমাণ লোপাটের গ্রেফতার করা হল, তা রাত পর্যন্ত স্পষ্ট হয়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার রাতে ডমনের বাড়ির উল্টো দিকে নাগর মণ্ডলের বাড়ির উঠোনে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলেন মালা। এই নাগরেরই ছেলে কালু। ঘটনার পরের দিন নাগর জানিয়েছিলেন, ওই রাতে জখম অবস্থায় মালা এসে তাঁর বাড়ির দরজা ধাক্কায়। তিনি দরজা খোলার পরেই সে পড়ে মারা যায়।
এ দিন নাগর বলেন, “ঘরে শিশু ও মহিলারা ছিল। তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। তাই ছেলে জল ঢেলে উঠোনে পড়ে থাকা রক্ত ধুয়ে দেয়।” তাঁর স্ত্রী ধানকুমারী বলেন, “ওই রক্ত ধোয়াই যেন দোষ হয়েছে ছেলের।” কালুর স্ত্রী কদমের দাবি, “ওই রাতে ও আমার পাশেই শুয়ে ছিল। ওই ঘটনার পরে মালার দেহ তুলে ও ডমনের বাড়িতে রেখে এসে উঠানের রক্ত ধুয়ে দেয়। ও খুনের কিছু জানে না, তবুও পুলিশ ওকে ধরে নিয়ে গিয়েছে।”
কৃষ্ণের স্ত্রী কণিকা মণ্ডলের দাবি, “কালুর সঙ্গে আমার স্বামীর তেমন কথা হত না। পুলিশ কেন কালুকে গ্রেফতার করেছে তা বলতে পারব না।” একই বক্তব্য কৃষ্ণের বড় ছেলে গোপীনাথ মণ্ডলেরও।
এই খুনের কিনারা করতে ছয় সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল গড়েছে কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশ। কিন্তু এখনও ওই খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। সিআইডি-র ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞদের অনুমান, একাধিক লোক ওই খুনে জড়িত ছিল। তবে পুলিশের তদন্তে অনাস্থা প্রকাশ করে মৃতের পরিবার ইতিমধ্যেই সিবিআই বা হাই কোর্টের নজরদারিতে তদন্তের আর্জি জানিয়েছে। ‘সিট’-এর নেতৃত্বে থাকা কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) কৃশানু রায় বলেন, “খুনের প্রমাণ লোপাটের জন্যই কালুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে পুলিশ হেফাজতে জেরা করার পরে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।”