ধুবুলিয়া থানায় সোনা চুরি চক্রের ধৃতেরা। নিজস্ব চিত্র।
কিছু দিন ধরেই ধুবুলিয়া ও চাপড়ার সীমান্ত এলাকা থেকে খোয়া যাচ্ছিল সোনার গয়না। কখনও বাড়ির ভিতর থেকে চুরি তো কখনও ভিড় বাজারে হাতসাফাই বা কেপমারি করে দুষ্কৃতীরা হাতিয়ে নিচ্ছিল সোনার গয়না। এ বার সেই গয়না-কাণ্ডে যোগের অভিযোগে ‘চাপড়া গ্যাংয়ের’ বিরুদ্ধে অভিযান চালাল পুলিশ।
ধুবুলিয়া থানার দাবি, সূত্র মারফত খবর পেয়ে ধরা হয়েছে বিষ্ণু দাস ও কবিরুল মণ্ডল নামে ‘চাপড়া গ্যাংয়ের’ দুই সদস্যকে। পুলিশ সূত্রের খবর, দু’জনের বাড়িই চাপড়াতে। ধৃতদের থেকে একটি সোনার লকেট, চেন, আংটি উদ্ধার করা গিয়েছে। পাশাপাশি উদ্ধার হয়েছে ন’টি মোবাইল।
তাঁদের জেরার জন্য শুক্রবার পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ধুবুলিয়া থানার পাশাপাশি গোটা জেলাতেই এই গ্যাং সক্রিয় ছিল বলে মনে করছেন তদন্তকারী অফিসাররা। ধৃতদের থেকে বেশি কিছু মোবাইল ও সোনার গয়না উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, বাজারে ওই চোরাই গয়না চার ভাগের এক ভাগ দামে বিক্রি করত ‘চাপড়া গ্যাং’। ধৃত দু’জনকে জেরা করে দলের অন্যদের খোঁজ করা হচ্ছে বলে দাবি পুলিশের।
সপ্তাহ কয়েক আগে ধুবুলিয়া থানা একটি মোবাইল চুরি চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছিল। বিগত দু’মাস ধরে ধুবুলিয়ার কিছু এলাকা থেকে মোবাইল চুরির অভিযোগ জমা পড়ে। মোবাইল চুরির সেই ঘটনার তদন্তে নেমে আইএমপিএস নম্বর ট্র্যাক করে মোবাইলগুলি উদ্ধার করা হয়েছিল। এর পর নদী লাগোয়া এলাকা থেকে গয়না ও মোবাইল চুরির অভিযোগ আসতে শুরু করে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার তদন্তে প্রথমে চাপড়ার বাঙালঝি এলাকা থেকে বিষ্ণু দাসকে গ্রেফতার করা হয়। চাপড়ায় ওই ব্যক্তির সোনার দোকান রয়েছে। জেরায় বিষ্ণু গ্যাংয়ের সদস্য কবিরুলের নাম বলে দেন। কবিরুলও থাকতেন চাপড়া থানার বাঙালঝিতে। পুলিশের দাবি, কবিরুল বিভিন্ন জায়গা থেকে সোনার গয়না চুরি করে বিষ্ণুর দোকানে বিক্রি করতেন। তার পর বিষ্ণু সেই গয়না গলিয়ে সোনা বার করতেন। গয়নার সোনার মানের উপর নির্ভর করত কবিরুলের পারিশ্রমিক। বাজারদরের উপর নির্ভর করত কবিরুলের ‘পারিশ্রমিক’। সাধারণ ভাবে ভরিপ্রতি বাজারদরের তুলনায় এক চতুর্থাংশ টাকা পেতেন তিনি।
পুলিশের দাবি, সোনার গয়নার পাশাপাশি মোবাইলও চুরি করে বিক্রি করতেন কবিরুল। আদতে তাঁর বাড়ি ধুবুলিয়া থানার সোনাতলা এলাকায়। ওই এলাকা থেকেই বিগত সাত দিন ধরে সোনার গয়না চুরি যাচ্ছিল। ধুবুলিয়া থানার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এর আগে ধুবুলিয়া এলাকায় মোবাইল পাচারকারী গ্যাং সক্রিয় হয়েছিল। ধরপাকড়ের মাধ্যমে সেই গ্যাংটিকে ভেঙে দেওয়া গিয়েছে। মোবাইলগুলিও উদ্ধার হয়েছে। এর পর চাপড়া গ্যাংয়ের দু’জনকে ধরা হয়েছে।’’ তিনি জানান, কবিরুল ছাড়াও আরও কয়েক জনের থেকে বিষ্ণু চোরাই সোনা কিনতেন বলে সন্দেহ করছেন তদন্তকারীরা।