বাড়ি থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে পড়েছিল অগ্নিদগ্ধ দেহটা। পাশেই পড়েছিল সাইকেল, টাকার ব্যাগ, কেরোসিনের জার ও একজোড়া চপ্পল। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় করিমপুরের অভয়পুর মাঠে দেহটি দেখতে পান স্থানীয় কয়েক জন চাষি। তাঁরাই খবর দেন করিমপুর থানায়। পুলিশ এসে বছর পঁচিশের প্রিয়া সাহা নামে ওই তরুণীর দেহ উদ্ধার করে।
প্রথমে ওই মহিলার পরিচয় জানা যায়নি। পরে তাঁর বাড়ির লোকজন এসে শনাক্ত করেন। প্রিয়ার শ্বশুরবাড়ি কাঁঠালিয়ায়। কিন্তু গত কয়েক বছর থেকে দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে তিনি করিমপুর রামকৃষ্ণপল্লিতে থাকতেন। তেহট্টের এসডিপিও কার্তিক মণ্ডল বলেন, ‘‘এটা খুন না আত্মহত্যা স্পষ্ট নয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে আরও কিছু বিষয় সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারব।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রিয়ার স্বামী উজ্জ্বল সাহা বাইরে কাজ করেন। দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে রামকৃষ্ণপল্লির ভাড়া বাড়িতে খুব কষ্ট করে থাকতেন প্রিয়া। তাঁর দাদু নৃপেন সাহা জানান, সাত বছর আগে প্রিয়ার বিয়ে হয়। বছর কয়েক আগে থেকেই উজ্জ্বল বাইরে থাকতে শুরু করেন। মাঝে মাঝে তিনি প্রিয়ার কাছে এলেও সংসার চালানোর জন্য টাকা দিতেন না। বাধ্য হয়ে প্রিয়া কাগজের ঠোঙা তৈরি করে দোকানে বিক্রি করতেন।
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ তিনি সাইকেলে ঠোঙা দিতে বেরিয়েছিলেন। আর ফেরেননি। নৃপেনবাবুর অভিযোগ, প্রিয়ার স্বামী উজ্জ্বলকে ফোনে মৃত্যুর খবর দেওয়া হলেও এ দিন দুপুর পর্যন্ত তিনি আসেননি। সকালে থানায় রাখা ছিল প্রিয়ার দেহ। সে দিকে তাকিয়ে দুই ভাইবোন নাগাড়ে বলে গিয়েছে, ‘‘মা এখানে ঘুমোচ্ছে কেন? আমরা বাড়ি যাব কখন?”