Jangipur

বাড়ি খুঁড়েও কাটল না সন্দেহ

এক যুবকের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় শুক্রবার এ ভাবেই  তোলপাড় হল গোটা গ্রাম। ওই যুবকের নিখোঁজ হওয়ার পরে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন তাঁর স্ত্রী ও পরিবারের লোকজনও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২৩ ০৯:৩২
Share:

ঘরের ভিতরে খোঁড়াখুঁড়ি। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়

সন্দেহ থেকেই দিনভর হয়রানির একশেষ হল পুলিশ। গোটা বাড়ির একাধিক জায়গা খুঁড়েও মিলল না কিছুই। কিন্তু সন্দেহ এখনও কাটেনি আহিরণ লাগোয়া পঞ্চবটী গ্রামের বাসিন্দাদের। সকলেরই এক কথা, লোকটা কি তবে বেমালুম উড়ে গেল? আর বাড়ির লোকেরাই বা গেল কোথায়?

Advertisement

এক যুবকের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় শুক্রবার এ ভাবেই তোলপাড় হল গোটা গ্রাম। ওই যুবকের নিখোঁজ হওয়ার পরে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন তাঁর স্ত্রী ও পরিবারের লোকজনও। আর তাতেই প্রতিবেশীদের একাংশের সন্দেহ আরও বেড়েছে। পুলিশও একেবারে উড়িয়ে দিতে পারছে না সেই সন্দেহ। দিনভর তাই নিখোঁজ যুবকের পঞ্চবটী গ্রামে বাড়ির বাইরে, ঘরের ভিতরে চলল মাটি খোঁড়ার কাজ।

ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলেন রঘুনাথগঞ্জ থানার আইসি পার্থ ঘোষ, এসডিপিও বিদ্যুৎ তরফদার, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। তাঁদের সঙ্গে পুলিশের বাহিনী ও বেশ কয়েক জন মজুর। কয়েক ঘণ্টা খোঁড়াখুঁড়ি করেও অবশ্য মিলল না কিছুই।

Advertisement

নিখোঁজ যুবকের নাম দশরথ দাস। বাড়ি সুতির সুজনিপাড়া গ্রামে। দশরথের বিয়ে হয়েছে সুতিরই বাগডাঙা গ্রামে। দুই মেয়ে তাঁর। বড় মেয়ের বিয়ে হয়েছে। জামাইয়ের বাড়িও সুজনিপাড়াতেই। কিন্তু স্থানীয় সূত্রে দানা গিয়েছে, তিনি থাকত শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন বেশির ভাগ সময়।

দশরথের ভাই উৎপল দাস বলছেন, “বিয়ে হলেও বৌদি ও ছেলেমেয়েরা কখনও সুজনিপাড়ায় আসত না। দাদা একা থাকত সজনিপাড়ায় তার বাড়িতে। মাঝে মাঝে যাতায়াত করত শ্বশুরবাড়ি। বছর খানেক আগে বাগডাঙার বাড়ি বিক্রি করে বৌদি পঞ্চবটী গ্রামে জমি কিনে বাড়ি বানিয়ে সপরিবার বাস করতে শুরু করেন।” কয়েক দিন আগে হঠাৎই স্ত্রী ও পরিবারের সকলেই হাজির একদিন সুজনিপাড়ার বাড়িতে। উৎপল বলছেন, “আমরা অবাক। সারা জীবনে যার দেখা মেলেনি হঠাৎ তারাই দাদার বাড়িতে কেন? তবে মঙ্গলবার এক গাড়ি এসে ভিড়ল বাড়িতে। এক মহিলা দেখে ফেলে জিজ্ঞেস করতেই বৌদি জানান, নাতি অসুস্থ, তাই হাসপাতাল যাবেন। এই বলে দাদার বাড়িতে তালা দিয়ে উধাও তাঁরা, সঙ্গে দাদাও।”

দশরথের পরিবারের অভিযোগ, এর পর থেকেই আর তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তিনি পঞ্চবটীর বাড়িতে গিয়েছেন বলে জানানো হলেও যক ফোন করা হয়েছে, ধরেছেন তাঁর স্ত্রী। বুধবার দশরথ নিখোঁজ বলে অভিযোগ জানানো হয় থানায়। সেই থেকেই খোঁজ চলছিল। কিন্তু শুক্রবার সকাল হতেই দেখা গেল পঞ্চবটীর বাড়িতেও তালা। সেখান থেকে গোটা পরিবারই উধাও। সোশাল মিডিয়া তখন থেকেই ছয়লাপ দশরথের খোঁজে।

এরপরই ভিড় ভাঙল পঞ্চবটীর বাড়িতে। শুরু হল নানা জল্পনা। বাড়ির বাইরের ঘেরা চত্বরে আলগা হয়ে খোঁড়া রয়েছে মাটি। ভাঙা হল ঘরের তালা। সেখানেও খোঁড়া আলগা মাটি। সেখানে যান জেলার এক ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পূর্ণদেব মালাকার। তিনি বলেন, “মহকুমা শাসকের নির্দেশেই এসেছি। সন্দেহ এক নিখোঁজ ব্যক্তির দেহ পুঁতে রাখা হয়েছে। খোঁড়াখুঁড়ি করে অবশ্য কিছু মেলেনি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement