কিরীটেশ্বরী মন্দিরে পুজো। নিজস্ব চিত্র।
একান্ন সতীপীঠের অন্যতম কিরীটেশ্বরী। কালীপুজো উপলক্ষে রবিবার মন্দির চত্বর সেজে উঠল আলোর মালায়। এ বছরই কেন্দ্রের বিচারে দেশের সেরা ‘পর্যটন গ্রামে’র শিরোপা পেয়েছে কিরীটেশ্বরী গ্রাম। তাই বাসিন্দাদের এ বারের পুজোয় উচ্ছ্বাস যেন সব বাঁধ ভেঙে দিয়েছে।
অন্য বছরের তুলনায় এ বার ভক্তদের সমাগম অনেক বেশি বলে দাবি তিনটি আলাদা মন্দিরের সেবায়েত ও পুরোহিতদের। পলসন্ডা-ডাহাপাড়া সড়কের পাশেই রয়েছে আদি দু’টি মন্দির। দেবীর গুপ্ত মন্দির রয়েছে তিনশো মিটার দূরে লোকচক্ষুর আড়ালে। একটি মন্দিরের সেবায়েত দিলীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বাংলা ১৩৩৭ সনে লালগোলার মহারাজা যোগীন্দ্রনারায়ণ রায় মন্দির সংস্কার করেছিলেন। কৌশিকী ও দীপান্বিতা আমাবস্যায় সবচেয়ে বেশি ভক্ত-সমাগম হয়। কালীপুজোর রাতে অন্যবার হাজার পাঁচেক ভক্ত রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসেন। তবে এ বার সেই সংখ্যা আরও বেশি।” আরেক মন্দিরের পুরোহিত রক্ষাকর চক্রবর্তী বলেন, “প্রতি বছর এই মন্দিরে অন্য জেলা থেকেও ভক্তরা আসেন। গভীর রাতে পুজো শুরু হয়। চলে সকাল পর্যন্ত।”
উত্তর ২৪ পরগনার দমদম থেকে মন্দিরে পুজো দিতে এসেছেন সোমা চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “তিনটি মন্দিরেই প্রতিমা দর্শন করলাম। এখানকার দেবী খুব জাগ্রত। তাই প্রতিবার এখানে কালীপুজোর দিন ছুটে আসি।”
গুপ্ত মন্দিরের মূল পুরোহিত নেপাল ভট্টাচার্য মন্দিরের প্রতিষ্ঠার সময় নিয়ে নির্দিষ্ট ভাবে কিছু জানাতে পারলেন না।
তিনি বলেন, ‘‘অজ্ঞাত কারণে দেবীর ব্রহ্মশিলা কালীসাগর সংলগ্ন আদি মন্দির থেকে গুপ্ত মন্দিরে লোকচক্ষুর আড়ালে নিয়ে আসা হয়েছিল। দেবীর ৫১ সতীপীঠের সবক’টিতেই ব্রহ্মশিলা রয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে কালীপুজোর সময় ভক্তরা আসেন এখানে।’’ রবিবার মধ্যরাতে পুজো শুরু হয়। একই সঙ্গে চলে হোমযজ্ঞও। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, একান্ন সতীপীঠের একটি হলেও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং রাতে থাকার বন্দোবস্ত না থাকায় পুণ্যার্থীদের নানা সমস্যায় পড়তে হয়। পুজো দিয়ে সেদিনই তাঁদের ফিরে যেতে হয়। প্রতি বছর ভক্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই এলাকায় রাত কাটানোর ব্যবস্থা প্রশাসনিক স্তরে গড়ে তোলার দাবি জানান তাঁরা।