প্রতীকী ছবি।
কর্মতীর্থের আইসোলেশন সেন্টারে এক রোগীর মৃত্যুর পর চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলল তাঁর পরিবার। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের বাড়ি তেহট্টের জিৎপুর মুসলিম পাড়ায়।
রোগীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে ৪৫ বছর বয়সি ওই ব্যক্তি মারা যান। এরপর স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে শনিবার ভোরেই তাঁকে মুসলিমপাড়ায় সমাধিস্থ করা হয়। তবে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন কি না, তা এখনও জানা যায়নি। আইসোলেশন-এ থাকাকালীন ওই ব্যক্তির লালারসের নমুনা সংগ্রহ করার কিছু সময় পরই তিনি মারা যান। রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
এই মৃত্যুর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে রোগীর পরিবার প্রশ্ন তুলেছে। তাঁদের বক্তব্য, ওই ব্যক্তি অন্য রাজ্য থেকে আসেননি। সামান্য কিছু সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সব কিছু না দেখে তাঁকে কেন আইসোলেশন-এ নিয়ে যাওয়া হল?
তেহট্টের মহকুমা শাসক অনীশ দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তির শ্বাসকষ্ট ছিল, তাই তাঁকে আইসোলেশন-এ নিয়ে যাওয়া হয় লালা রসের নমুনা পাঠানোর জন্য। অবশ্য শুক্রবার নমুনা সংগ্রহ করা হলেও তার কিছুক্ষণ পর মোটামুটি ৯ টা নাগাদ তিনি মারা যান।’’ পাশাপাশি তিনি জানান, মৃতদেহ থেকে যাতে জীবাণু না ছড়ায় তা নিশ্চিত করতে মৃতদেহে হাইপোক্লোরাইট সলিউশন লাগিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়। প্রশাসনের কর্মীরা মৃতের স্ত্রী ও মেয়ের উপস্থিতিতে স্থানীয় একটি মাঠে দেহ সমাধিস্থ করেন।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪৫ বছরের ওই ব্যক্তি বেশ কিছু দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। কোনও খাবারই তিনি খেতে পারছিলেন না। চিকিৎসকের বক্তব্য অনুযায়ী, তাঁর লিভারের সমস্যা ছিল। গত বুধবার সকালে তাঁকে তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখান থেকে তাঁকে কর্মতীর্থের আইসোলেশন সেন্টারে পাঠান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের পরিবারে রয়েছেন স্ত্রী ও এক মেয়ে। বিয়ের পর মেয়ে এখন অন্য জায়গায় থাকেন। ফলে স্ত্রীকেই ওই ব্যক্তির দেখাশোনা করতে হত। মৃতের মেয়ে বলেন, ‘‘বাবা কিছু দিন ধরে খেতে পারছিলেন না, ডাক্তার লিভারের সমস্যা হয়েছে বলে জানিয়ে দেন। এরপর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখান থেকে বাবাকে আইসোলেশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়।’’ পাশাপাশি তিনি জানান, সেখানে কর্মরত নার্সদের বার বার বলা হয়েছিল শারীরিক সুস্থতার কারণে তাঁর বাবা নিজে থেকে খেতে পারেন না। ওঁকে খাইয়ে দিতে হয়। কিন্তু তাঁদের কথা কেউ শোনেননি বলে তাঁর অভিযোগ। তাঁর দাবি, আইসোলেশন সেন্টারে তাঁর বাবার দোখাশোনা করার মতো কেউ ছিলেন না।