রূপ ফিরেছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের।
মাস দেড়েক আগেও সপ্তাহে তিন দিন চিকিৎসা পরিষেবা মিলত। কিন্তু করোনাভাইরাসের আবহে সেটা আমূল বদলে গিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, এখন সপ্তাহে ছ’দিনই চিকিৎসা মিলছে সেখানে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বহির্বিভাগে শয়ে শয়ে রোগী দেখছেন চিকিৎসক। কান্দির লক্ষ্মীকান্তপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এই নতুন ‘অবতারে’ খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা।
কান্দি ব্লকের মধ্যে হিজল, আন্দুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত প্রতি বছরেই বর্যায় জলভাসি হয়। কান্দি মহকুমা হাসপাতাল থেকে ওই অঞ্চলের লক্ষ্মীকান্তপুর হাসপাতালের দূরত্ব প্রায় সাত কিলোমিটার। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, বর্যার সময় ওই এলাকা থেকে মহকুমা হাসপাতালে যাতায়াত করা আরও কঠিন হয়ে পড়ে। যানবাহন মিললেও জলপথ পেরিয়ে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দু’গুণ, তিন গুণ ভাড়া হাঁকেন চালক। ফলে রোগ গুরুতর না হলে গ্রামবাসীরা লক্ষ্মীকান্তপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওপরেই ভরসা করেন। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, কিছুদিন আগে পর্যন্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহির্বিভাগে তিন দিনের বেশি চিকিৎসক বসতেন না। ফলে বাকি দিনগুলিতে প্রসূতি কিংবা সঙ্কটজনক রোগীকে নিয়ে তাঁরা কান্দি মহকুমা হাসপাতালেই ছুটতেন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর একাংশের ক্ষোভও ছিল। কিন্তু লকডাউনে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সপ্তাহে ছ’দিনই ডাক্তার মিলছে। বহির্বিভাগে একজন চিকিৎসক, নার্স, ফার্মাসিস্ট সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শ’দুয়েক রোগীর ভিড় সামাল দিচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সাহিদ শেখ, নির্মল দাসরা বলেন, “আমাদের এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দা কৃষিজীবী, আর্থিক সঙ্গতি নেই। ফলে কথায় কথায় তাঁদের পক্ষে কান্দি হাসপাতালে ছোটা সম্ভব না। লকডাউনে ছ’দিন করে চিকিৎসক আসছেন। ফলে আমাদের আর কান্দি যেতে হচ্ছে না। এতে সুবিধা হয়েছে।’’
আন্দুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার লক্ষ্মীকান্তপুর, আন্দুলিয়া, শাসপাড়ার মতো অন্তত দশটি গ্রামের মানুষ ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওপর নির্ভর করেন। ছ’দিন পরিষেবা পেয়ে তাঁদের সকলেরই সুবিধা হয়েছে। এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘লকডাউনে রোজগার বন্ধ, এই সময় লছিমন, টোটো ভাড়া করে কান্দি যেতে হলে সমস্যায় পড়তাম। তবে হাসপাতালে সারা ক্ষণের ডাক্তার থাকলে ভাল হয়। তা হলে আর রাতবিরেতে প্রসূতি মহিলাদের নিয়ে কান্দি ছুটতে হয় না।’’ কান্দির ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক উজ্জ্বল চন্দ্র বলেন, ‘‘প্রসব করানোর ব্যবস্থা যাতে করা যায়, সেই চেষ্টা করছি।’’