Nabanna

Nabanna: ভাগের গুণে যোগ-বিয়োগ

মঙ্গলবার প্রায় সারা দিনই জেলার বিভিন্ন অংশে পথে নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন এঁরা। সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ-মিছিলেন সাক্ষী থেকেছে শান্তিপুর।

Advertisement

সম্রাট চন্দ

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২২ ০৫:৪৯
Share:

পথে নেমে প্রতিবাদ নিজস্ব চিত্র।

কারও আপত্তি ভাগে, কারও আবার শুধু নামে।

Advertisement

নদিয়া ভেঙে নদিয়া ও রানাঘাট—এই দুই জেলা-র ঘোষণামাত্র নদিয়াবাসীর একাংশ প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কিছু মানুষের আপত্তি জেলা ভাগ করা নিয়েই। তাঁরা অবিচ্ছেদ্য নদিয়ার পক্ষে। আর আরেকটা অংশ জেলাভাগ মানলেও নতুন জেলার ‘রানাঘাট’ নাম মানতে পারছেন না। তাতে কোথাও নদিয়ার ঐতিহ্য ধাক্কা খাচ্ছে বলে তাঁদের মনে হচ্ছে।

মঙ্গলবার প্রায় সারা দিনই জেলার বিভিন্ন অংশে পথে নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন এঁরা। সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ-মিছিলেন সাক্ষী থেকেছে শান্তিপুর। অরাজনৈতিকভাবে সংগঠিত আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন বহু সাধারণ মানুষ ও বিশিষ্ট জন। কৃষ্ণনগরেও এ দিন জেলা ভাগের বিরোধিতা করে জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন একদল যুবক যুবতী।

Advertisement

জেলার প্রাচীন পুরসভা শান্তিপুর রাজ্যের সংস্কৃতির অন্যতম পীঠস্থান। জেলা ভাগ হওয়ায় শান্তিপুর পড়ছে রানাঘাট জেলার মধ্যে। এতেই শান্তিপুরবাসীর একাংশ অসন্তুষ্ট। তাঁরা অনেকে জেলা ভাগটাই মানতে পারছেন না। আবার একাংশ বলছেন, শান্তিপুরের নামের সঙ্গে আর নদিয়া নামটা জুড়ে থাকবে না, এটা তাঁদের ভাবতে অসুবিধা হচ্ছে। নতুন জেলার নামে অন্তত ‘নদিয়া’ শব্দটি যেন থাকে এটাই তাঁদের দাবি। সোমবার থেকেই এই সব দাবিদাওয়া প্রতিফলিত হয়েছে সমাজমাধ্যমে।

যাঁরা নদিয়া ভাগেরই বিরুদ্ধে তাঁরা যুক্তি দিয়েছেন, এর ফলে অদ্বৈতাচার্যের শান্তিপুর আর চৈতন্যদেবের নবদ্বীপ আলাদা হয়ে যাবে। তা ছাড়া, শান্তিপুরের রাস, জগদ্ধাত্রীপুজো, বিভিন্ন বিগ্রহ বাড়ির উৎসব সেই কোন আদিকাল থেকে নদিয়ারই উৎসব হিসাবে পরিচিত হয়ে এসেছে। তাদের ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কী হবে? লক্ষ্মীকান্ত মৈত্র, করুণানিধান বন্দ্যোপাধ্যায়, মোজাম্মেল হকদের মত মনীষীরাও শান্তিপুর তথা নদিয়ার কৃতী সন্তান। আন্দোলনকারীদের দাবি, নদিয়া থেকে শান্তিপুরকে মুছে দেওয়া মানে এঁদেরকেও নদিয়া থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া। প্রতিবাদের পথ হিসাবে অদ্বৈতভূমির রাজপথকেই বেছে নিয়েছিলেন আমজনতা। মঙ্গলবার কার্যত মানুষের ঢল নামে শান্তিপুরের রাজপথে। শহরের প্রাণকেন্দ্রে নেতাজি মূর্তির সামনে শুরু হয় অবস্থান-বিক্ষোভ। ডাকঘর মোড়ে এসে অবস্থান শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। সেখান থেকে একটি মিছিল যায় কাশ্যপপাড়া মোড় পর্যন্ত। বিকেলে ফের বড় মিছিল হয় পাবলিক লাইব্রেরি থেকে। শহরের বিভিন্ন বিশিষ্ট নাগরিক, শিক্ষক, চিকিৎসক থেকে শুরু করে নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থা এবং বিগ্রহ বাড়ির প্রতিনিধিরাও এতে পা মেলান। হাতে-হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড আর কণ্ঠে গান এবং স্লোগান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement